গানেও ছিল সালমানের আগ্রহ, করেছেন প্লেব্যাক


স্কুলে পড়ার সময় বন্ধুমহলে সংগীতশিল্পী হিসেবে পরিচিতি ছিল সালমান শাহর। ১৯৮২ সালে বিটিভির ‘ছোট্ট খবর’ নামের ছোটদের অনুষ্ঠানে গান গাইতেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে টিভি নাটকে তাঁর যাত্রা। ১৯৮৫ সালে বিটিভির ‘আকাশ ছোঁয়া’ নাটক দিয়ে অভিনয় শুরু সালমানের। এরপর অভিনয় করেন ‘দেয়াল’ (১৯৮৫), ‘সব পাখি ঘরে ফিরে’ (১৯৮৫), ‘সৈকতে সারস’ (১৯৮৮) ইত্যাদি নাটকে।
নাটক থেকে একসময় সিনেমায় নাম লেখান সালমান। ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক। এরপর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সালমানকে। একের পর এক সিনেমায় কাজ করতে থাকেন। অভিনয়ের ব্যস্ততার কারণে পরে আর গানে সেভাবে সময় দিতে পারেননি। তবে গানের প্রতি ভালোবাসা ঠিকই ছিল তাঁর।
১৯৯৪ সালে ধারাবাহিক নাটক ‘ইতিকথা’য় এক সংগীতশিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এই নাটকে তাঁকে গিটার বাজিয়ে ‘বজ্রযোগিনী’ শিরোনামের গান করতে দেখা যায়। সেই গানে ছিল বব মার্লে, পল রবসনের প্রসঙ্গ। নাটকের সংলাপে মার্কিন সংগীতশিল্পী পল রবসনকে নিজের গুরু বলে সম্বোধন করেন সালমান।
এই নাটকের আরেকটি দৃশ্যে ‘মা’ নিয়ে একটি ইংরেজি গানও শোনা গিয়েছিল সালমানের কণ্ঠে।
সিনেমার সেটে সময় পেলে গান গাইতেন সালমান শাহ। একদিন ‘প্রেম যুদ্ধ’ সিনেমার সেটেও গুনগুন করছিলেন সালমান। সেটি খেয়াল করেন নির্মাতা জীবন রহমান। ভালো লাগে তাঁর। তখনই সালমানের কাছে গিয়ে বলেছিলেন, ‘তুমি তো দারুণ গাও।’ সালমানও মজা করে নির্মাতার কাছে আবদার করেন, ‘তাহলে আপনার সিনেমায় প্লেব্যাক করান।’
সালমানের মজার ছলে বলা কথাকে সিরিয়াসলি নেন জীবন রহমান। সে সময় সব নির্মাতার চাওয়া ছিল, সালমানের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করা। জীবন রহমানও চাননি সুযোগ হাতছাড়া করতে। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে ফোন করে সালমান শাহকে নিয়ে একটি গান করার কথা বলেন।
পরিকল্পনামাফিক তৈরি হলো গান। রেকর্ডিংয়েও নির্মাতাকে অবাক করেন সালমান। মাত্র ২ ঘণ্টায় শেষ করেন ‘তুমি আমার জীবনের এক স্বপ্ন যেন’ গানের রেকর্ডিং। এতে তাঁর সহশিল্পী ছিলেন কনকচাঁপা। গানের কথা মৌলিক হলেও সুরটি কুমার শানুর গাওয়া ‘এক লাড়কি কো দেখা তো’ গান থেকে নেওয়া। তবু সালমানের কল্যাণে গানটি জনপ্রিয়তা পায়।
সালমানের গাওয়া গানটি জনপ্রিয়তা পাওয়ায় জীবন রহমান পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁর পরবর্তী সিনেমায়ও নায়কের কণ্ঠে একটি গান রাখবেন। সালমান শাহর অকাল প্রয়াণে সেটি আর সম্ভব হয়নি।
তবে ইউটিউবে সালমানের কণ্ঠে ‘রজনীগন্ধা’ শিরোনামের আরেকটি গান পাওয়া যায়। সেই গানের বিবরণে লেখা আছে, একটি নির্মাণাধীন সিনেমার জন্য এটি রেকর্ড করা হয়েছিল। সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি।
ক্রাইম জোন ২৪