শিরোনাম
উত্তর প্রদেশে তীর্থযাত্রী বহনকারী ট্রাক্টর-ট্রলিতে ট্রাকের ধাক্কা, ৮ জনের মৃত্যুপঞ্চগড়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে অস্ত্রোপচার, যৌথ বাহিনীর অভিযানে হাসপাতাল সিলগালাভিয়েতনাম-চীনে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় কাজিকি, সরানো হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকেমহাশূন্যে পৃথিবীর ছায়ায় ভিন গ্রহের মহাকাশযান খুঁজছেন বিজ্ঞানীরাউপদেষ্টা হোক আর রাজনীতিবিদ, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না: সারজিস আলমঢাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, গরম কমবে কিইসিতে ধাক্কাধাক্কি-কিল-ঘুষি: রুমিন অনুসারীদের মহাসড়ক অবরোধসিনিয়র-জুনিয়রের সম্পর্ক যেমন হওয়া উচিতনিরাপত্তায় থাকবে সেনাবাহিনী-বিজিবিচলতি সপ্তাহেই চাকসুর তফসিল ঘোষণা

মহাশূন্যে পৃথিবীর ছায়ায় ভিন গ্রহের মহাকাশযান খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা

মহাশূন্যে পৃথিবীর ছায়ায় ভিন গ্রহের মহাকাশযান খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা

কয়েক দশক ধরে রেডিও টেলিস্কোপ ও অপটিক্যাল যন্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশে এলিয়েন বা ভিন গ্রহের প্রাণীদের কৃত্রিম সংকেত খুঁজে বেড়াচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তবে এবার গবেষকেরা নজর দিয়েছেন অনেক কাছাকাছি—আমাদের সৌরজগতেই। তাঁদের লক্ষ্য—যদি কোনো উন্নত ভিন গ্রহ প্রাণীরা আগে থেকেই কোনো অনুসন্ধানী যন্ত্র পাঠিয়ে থাকে, তাহলে তা শনাক্ত করা। এ জন্য পৃথিবীর ছায়াকে ব্যবহার করছেন গবেষকেরা।

নতুন গবেষণাটি ‘মান্থলি নোটিশেস অব দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তাঁরা পৃথিবীর ছায়াকে ব্যবহার করছেন একটি স্বাভাবিক ‘ফিল্টার’ হিসেবে। এর মাধ্যমে কৃত্রিম স্যাটেলাইট ও মহাকাশের বর্জ্যের ঝামেলা এড়িয়ে তাঁরা খুঁজছেন অচেনা, অজানা বস্তু।

বর্তমানে পৃথিবীর কক্ষপথে হাজার হাজার কৃত্রিম স্যাটেলাইট ও লাখ লাখ প্রতিফলনশীল বস্তুর কারণে আকাশের দিকে নজর রাখা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠেছে। এ ধরনের ‘দূষণ’ বিজ্ঞানীদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

এ সমস্যার সমাধান হিসেবে সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বেয়াত্রিস ভিয়ারোয়েল ও তাঁর আন্তর্জাতিক গবেষক দল বেছে নিয়েছেন পৃথিবীর ছায়াকে। প্রতিরাতে পৃথিবী মহাকাশে একটি শঙ্কু-আকৃতির ছায়া ফেলে, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। ফলে সেখানে কৃত্রিম স্যাটেলাইট বা মহাকাশের বর্জ্যে থেকে আলোর প্রতিফলন হয় না।

এই ছায়ার ভেতরে একধরনের ‘পরিষ্কার অঞ্চল’ তৈরি হয়, যেখানে খোঁজা যায় অস্বাভাবিক কিছু। জিওসিঙ্ক্রোনাস কক্ষপথে (পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৩৫ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরে) পৃথিবীর ছায়ার বিস্তার হয় ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি পর্যন্ত।

মানবসৃষ্ট স্যাটেলাইট সাধারণত দৃশ্যমান আলোর উৎস বহন করে না, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, যেমন—কমিউনিকেশন লেজার বা মহাকাশযানের থ্রাস্টার। তাই এই ছায়ার ভেতরে যদি হঠাৎ উজ্জ্বল কোনো ফ্ল্যাশ বা রেখা দেখা যায়, সেটি হতে পারে ভিন্ন কোনো কিছুর ইঙ্গিত।

গবেষকেরা ক্যালিফোর্নিয়ার জুইকি ট্রানজিয়েন্ট ফ্যাসিলিটি (জেডটিএফ) নামের একটি টেলিস্কোপের ছবি বিশ্লেষণ করেছেন। এই টেলিস্কোপ নিয়মিত আকাশ স্ক্যান করে পরিবর্তনশীল বস্তু শনাক্ত করে। তাঁরা মোট ২ লাখেরও বেশি ছবি পরীক্ষা করেছেন, যা পৃথিবীর ছায়ার ভেতরে তোলা হয়েছিল।

এ কাজে ব্যবহৃত হয়েছে একটি স্বয়ংক্রিয় অনুসন্ধান ব্যবস্থা, যার নাম নিইওরিয়ন (NEOrion)। এটি হাজার হাজার সম্ভাব্য বস্তু শনাক্ত করে, যেগুলোর মধ্যে ছিল রহস্যময় রেখা ও বিন্দুর মতো আলো ঝলকানি। অধিকাংশই পরে শনাক্ত হয় উল্কা, এয়ারক্রাফট বা পরিচিত গ্রহাণু হিসেবে।

তবে একটি ঘটনা ছিল বেশ চমকপ্রদ—একটি অপরিচিত বস্তু শনাক্ত হয়, যার গতি সাধারণ গ্রহাণুর চেয়েও অনেক বেশি ছিল এবং যেটি কোনো বিদ্যমান মহাকাশীয় বস্তুর ডেটাবেইসে খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুঃখজনকভাবে, গবেষকেরা এর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি, ফলে এটি এখনো এক রহস্য।

গবেষণায় আরও কিছু নতুন পদ্ধতির কথাও বলা হয়েছে, যেমন—১৯৫৭ সালের আগে পুরোনো ছবি পরীক্ষা করা এবং মহাকাশে দীর্ঘদিন থাকা বস্তুগুলোর রং বা উপাদান বিশ্লেষণ করা। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করেন সেগুলো ভিন গ্রহের প্রাণীদের প্রযুক্তি হতে পারে কি না।

যদিও এই প্রাথমিক গবেষণায় নিশ্চিতভাবে কোনো এলিয়েন প্রযুক্তি শনাক্ত করা যায়নি। তবে এটি প্রমাণ করে দিয়েছে—বিদ্যমান টেলিস্কোপ ও নতুন বিশ্লেষণ কৌশল ব্যবহার করে এ ধরনের অনুসন্ধান এখন সম্ভব।

গবেষকেরা এখন ‘এক্সোপ্রোব’ নামের একটি নতুন প্রকল্প চালু করছেন, যা একাধিক টেলিস্কোপের সমন্বয়ে কাজ করবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রহস্যময় বস্তুর দূরত্ব ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য আরও নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা যাবে।

তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button