আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ প্রার্থীদের


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেই চলেছেন। গতকাল রোববার ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় কুশল ও মতবিনিময় এবং পৃথক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলেন শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট, ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল, উমামা ফাতেমার স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য, ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ডাকসু ফর চেঞ্জ, বাম সংগঠন সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদসহ অন্যান্য প্যানেলের প্রার্থীরা।
ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। ইতিমধ্যে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মানার নির্দেশনা দেয় ডাকসু নির্বাচন কমিশন। নির্দেশনায় বলা হয়, প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে এবং আবাসিক হলে ২৬ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচার কার্যক্রম চালাতে পারবেন। কিন্তু তার আগেই নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।

গতকাল দুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পরে বিজনেস ফ্যাকাল্টির সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী এস এম ফরহাদ। তিনি ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীদের ইঙ্গিত করে অভিযোগ তুলে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি দলের প্রতি একাধিকবার পক্ষপাত আচরণ করেছে, এখনো করছে। তিনি বলেন, কোনো কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। দলবদ্ধভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে। রিডিং রুমে যাচ্ছে। প্রশাসনকে কনসার্ন (জানালে) দেওয়ার পরেও তারা নীরব ভূমিকা দেখাচ্ছে, যেটা দুঃখজনক।
এদিকে শিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ ও ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলকে ইঙ্গিত করে উল্টা তাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধির লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীরা। ডাকসু নির্বাচনের ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতার আইডিওলজিকে (মতাদর্শ) যারা ধারণ করে না, তাদের ডাকসু নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষপাতিত্ব করেছে। গতকাল রোববার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বিজয় একাত্তর হলের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ অভিযোগ করেন।
এদিকে ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ও ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) বিন ইয়ামিন মোল্লা ছাত্রদল প্রার্থীদের ইঙ্গিত করে আচরণবিধির অভিযোগ তোলেন। বিন ইয়ামিন মোল্লা ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রার্থীরা সরাসরি ব্যানার টাঙিয়ে রাখছে। রিডিং রুমে তারা সরাসরি দলবদ্ধভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে। এটা তো আচরণবিধি লঙ্ঘন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অথচ আমরা করলে তখনই আমাদের ধরবে। এমন পক্ষপাত আচরণ আমরা দেখতে পাচ্ছি।
আবার প্রতিরোধ পর্ষদ (বাম সমর্থিত) এজিএস প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, অনেকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছে। নির্বাচন কমিশনারদের সামনেই এমন ঘটনা দেখা গেছে। তবুও প্রশাসন এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এমন ঘটনা চলতে থাকলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।
প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ক্রেডিবল ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করাই আমাদের প্রথম কাজ। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে যেসব প্রচারণামূলক বিলবোর্ড/ব্যানার টানানো রয়েছে কিংবা ইতিমধ্যে টানানো হয়েছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ক্রাইম জোন ২৪