শিরোনাম

টায়ার পুড়িয়ে তেল-কালি তৈরি, পরিবেশের ক্ষতি

টায়ার পুড়িয়ে তেল-কালি তৈরি, পরিবেশের ক্ষতি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় পরিত্যক্ত টায়ার পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে সড়কে পিচ ঢালাইয়ের জন্য জ্বালানি তেল (ফার্নেস অয়েল) ও ইটভাটায় ব্যবহৃত কালি। আবাদি জমিতে স্থাপিত এই কারখানার কালো ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে আশপাশের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের বাকাই এলাকায় আবাদি জমিতে এই কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। নেওয়া হয়নি পরিবেশ ছাড়পত্র। বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, ট্রাক ও মোটরসাইকেলের পরিত্যক্ত টায়ার সংগ্রহ করে কারখানাটিতে নিয়ে আসা হয়। পরে তা আগুনে গলিয়ে উৎপাদন করা হয় ফার্নেস অয়েল ও কালি। বিষাক্ত ধোঁয়া ও কালি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় খেতের ধান ও ফলগাছ নষ্ট হচ্ছে। গাছের ফুল-ফল ঝরে পড়ছে। এমনকি পুকুরের পানি দূষিত হয়ে মাছও মারা যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যের দুর্গন্ধে মাঠে কাজ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। শ্রমিকেরা মাঠে যেতে চান না। ফলে অনেক কৃষক কম টাকায় জমি বর্গা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। পানিতে নামলে হচ্ছে চর্মরোগ। ধানের ফলনও কমে গেছে।

কৃষক সোবহান আলী বলেন, মাছের ডিম সংগ্রহ করে রেণু করার জন্য পুকুরে ছেড়েছিলেন। কিন্তু সব মরে গেছে। আগে আন্দোলনের মুখে কারখানাটি বন্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু আবার চালু হয়েছে।

খোদা বক্স নামের আরেকজন বলেন, ‘এই কারখানা পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ফসলেরও বড় ক্ষতি হচ্ছে।’

কারখানার ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা স্বপন শেখ বলেন, টায়ার পুড়িয়ে ফার্নেস অয়েল ও কালি তৈরি করা হয়; যা ফায়ারিং (আগুন জ্বালানো) কাজে ব্যবহৃত হয়। কালি ইটভাটায় বিক্রি করা হয়।

কারখানা স্থাপনের জন্য সরকারের অনুমোদন আছে কি না, জানতে চাইলে স্বপন শেখ বলেন, ‘স্যারের সঙ্গে কথা বলে অনুমোদনের বিষয়টি জানাতে পারব।’

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ূন কবির বলেন, অবৈধভাবে কারখানা স্থাপনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. তুহিন আলম বলেন, এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠানকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button