শিরোনাম
ধানখেতে পোশাকশ্রমিকের হাত ভাঙা লাশফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ সুদানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ইসরায়েলের, চলছে আলোচনাদুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৩ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ, সাবেক বিএনপি নেতা আটকযমুনা সেতুর অবরোধ তুলে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরাঝিনাইদহে সড়কে প্রাণ গেল দুই স্কুলছাত্রেরনিজের মৃত্যুর নাটক সাজিয়েও হলো না শেষ রক্ষা, ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত মার্কিনিআন্দোলনকারীদের মারধর, থমথমে শেবাচিম হাসপাতালস্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ‘রকেট ফোর্স’ গঠনের ঘোষণাএবার গৃহস্থালির কাজে মানবাকৃতির রোবট, মানুষের মতোই ভাঁজ করছে কাপড়

খুনের সঙ্গে বেড়েছে চুরি-ছিনতাই

খুনের সঙ্গে বেড়েছে চুরি-ছিনতাই

যশোরে সাম্প্রতিক সময়ে খুনাখুনির পাশাপাশি চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে। এমনকি প্রকাশ্যে দিনদুপুরে ঘটছে খুনের ঘটনা। সর্বশেষ এক দিনের ব্যবধানে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটে গেছে। এ নিয়ে গত মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ মাসে ২৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া রাত নামলেই ছিনতাই ও চুরি হচ্ছে অহরহ।

এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। সচেতন নাগরিকেরা এই অবস্থার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বে অবহেলা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি সর্বোপরি পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে দুষছেন। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাগুলোর তদন্ত চলছে এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে সদরের কাশিমপুর ইউনিয়নের দৌলতদিহি গ্রামে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের কর্মী রেজাউল ইসলামকে। নিহত রেজাউলের ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, তাঁর বাবা একসময় রাজনীতি করলেও বছর চারেক তেমন সক্রিয় ছিলেন না। মঙ্গলবার রাতে ফোন পেয়ে তিনি ঘরের বাইরে যান। পরে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে অভয়নগর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে গলায় কাপড় প্যাঁচানো অবস্থায় লিমন শেখ (২৫) নামের এক ভ্যানচালকের মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ভ্যান ছিনতাইয়ের জন্য তাঁকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

জেলায় আলোচিত খুনের ঘটনা ঘটে ২২ মে। ওই দিন ঘের ইজারা দেওয়ার নামে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলামকে। এভাবে গত সাড়ে ৩ মাসে যশোরে রাজনীতির পাশাপাশি আধিপত্য, জমি, পরিবারসহ নানা বিরোধের জেরে ২৩ জনকে হত্যা করা হয়।

এ ছাড়া জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে রাত নামলেই ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। এ সময় ছুরিকাঘাতের ঘটনাও ঘটছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালে গত ৩ মাসে আহত ২৫-৩০ ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সার্জারি বিভাগের কর্মীরা। এসব ছিনতাইয়ের ক্ষেত্রে আইনি ঝামেলা ও ভোগান্তি এড়াতে অনেকে থানায় অভিযোগ দেন না। আবার অভিযোগ করেও তেমন লাভ হয় না। ফলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে ছিনতাইকারীরা।

এমন পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলার বাসিন্দারা। যশোরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও আইনজীবী আমিনুর রহমান হিরু বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর একটি পক্ষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে পড়েছে। তারা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। ল অ্যান্ড ফোর্স কাজ করছে না। খুন, ধর্ষণ, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বেড়েছে। এতে করে আমরা অনেক শঙ্কার মধ্যে জীবনযাপন করছি। পরিত্রাণের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর এবং রাজনৈতিক দল ও তাদের কর্মীদের নিবৃত্ত ও সহনশীল হতে হবে।’

এ নিয়ে কথা হলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘যশোরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সারা দেশে একই অবস্থা। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঠিকভাবে কাজ করছে না। মাঠপর্যায়ে পুলিশ কাজ না করায় চরমপন্থী, সন্ত্রাসীদের উত্থান হচ্ছে। অস্ত্র উদ্ধার ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের ধরা হচ্ছে না। এসব নানা কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হচ্ছে।’

তবে তা মানতে নারাজ যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবুল বাশার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে। দ্রুততম সময়ে ঘটনার কারণ উদ্‌ঘাটন, অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সীমিত জনবল দিয়েই অপরাধ দমনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button