মার্কিন শুল্কের ঘা খেয়ে পুতিন-জেলেনস্কির সঙ্গে মোদির ফোনালাপ, পরবর্তী কৌশল কী


মার্কিন শুল্কের ঘা খেয়ে পুতিন-জেলেনস্কির সঙ্গে মোদির ফোনালাপ, পরবর্তী কৌশল কী
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০০: ২৭
ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ব্যবসা নিয়ে কড়া অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, ভারত থেকে বাণিজ্যিক লেনদেনের অর্থ রাশিয়া ব্যবহার করছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাতে। এর জেরেই ভারতীয় পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন, যা দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর নতুন চাপ তৈরি করেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বিষয়টিকে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতির একটি স্পষ্ট সংকেত বলে দেখছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু নয়াদিল্লির দৃঢ় বার্তা। যেখানে বলা হচ্ছে, দেশের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থে কোনো আপস হবে না।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কূটনৈতিক তৎপরতা বিশেষভাবে চোখে পড়ছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এটি ভারতের ‘স্ট্র্যাটেজিক অটোনমি’ বা কৌশলগত স্বাধীনতা প্রদর্শনের একটি প্রচেষ্টা।
ভারত দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। একই সঙ্গে আমেরিকার সঙ্গে বৃহৎ অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা গড়ে তুলেছে। ট্রাম্পের শুল্কনীতি এই ভারসাম্য রক্ষার পথে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
বিশ্বরাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত আপাতত ব্যাকফুটে না গিয়েও সতর্ক কূটনীতি অবলম্বন করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব না বাড়িয়ে এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রেখে উভয় দিকেই দরজা খোলা রাখছে। তবে আমেরিকার বাজারে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতীয় রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় বিকল্প বাজার এবং বহুমুখী বাণিজ্যিক অংশীদারত্বের পথে জোর দিতে হবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের অবস্থান এখনো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়া-আমেরিকা দ্বন্দ্বের মাঝে এই ভারসাম্য কত দিন রাখা সম্ভব হবে, তা ভবিষ্যতের কূটনৈতিক চালচলনের ওপর নির্ভর করবে।
ক্রাইম জোন ২৪