অশুদ্ধ নিয়ত ইবাদত কবুলের অন্তরায়


কোনো ভালো কাজ, ইবাদত ও আমল আল্লাহর নিকট কবুল হওয়ার অপরিহার্য শর্ত হলো বিশুদ্ধ নিয়ত। বিশুদ্ধ নিয়ত মানে লোকদেখানো মনোভাব বর্জন করে কেবল আল্লাহকে রাজি ও সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে ইবাদতটি পালন করা। নিয়ত যার যেমন, সে প্রতিদানও পাবে তেমন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আমল কেবল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি মানুষ তাই পাবে যা সে নিয়ত করবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ০১)
বিশুদ্ধ নিয়ত ছাড়া ইবাদত মূল্যহীন। এর কোনো প্রতিদান পাওয়া যাবে না। হাদিস শরিফে হজরত আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর দরবারে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কেউ যদি এমন দুই নিয়তে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে যে—সে আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং পার্থিব জীবনে বীর-বাহাদুর প্রভৃতি সুনাম-সুখ্যাতিও চায়, তাহলে সে আল্লাহর নিকট কী প্রতিদান পাবে?’
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তার কোনো প্রতিদান নেই।’ লোকটি পরপর তিনবার কথাটি জিজ্ঞেস করল। মহানবী (সা.)-ও প্রত্যেকবার বললেন, ‘সে কিছুই পাবে না।’ এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা কেবল সে আমলই কবুল করেন, যা বিশুদ্ধ নিয়তে কেবল তাঁর জন্যই করা হয় এবং যা দ্বারা কেবল তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য হয়।’ (সুনানে নাসায়ি: ৩১৪০)
ইবাদতের নিয়ত বিশুদ্ধ না হলে আল্লাহ তাআলার নিকট তা কবুল হবে না। এ জন্য পবিত্র কোরআনে লোকদেখানো মনোভাব বর্জন করে ইবাদত করতে আদেশ করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ (হে নবী) আপনি বলুন, নিঃসন্দেহে আমি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করতে আদিষ্ট হয়েছি।’ (সুরা জুমার: ১১)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তাদের কেবল এ আদেশই করা হয়েছিল যে, তারা বিশুদ্ধ মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, নামাজ কায়েম করবে, জাকাত প্রদান করবে। আর এটাই সঠিক ধর্ম।’ (সুরা বাইয়িনা: ০৫)
আল্লাহ তাআলা সবাইকে বিশুদ্ধ নিয়তে ইবাদত করার তৌফিক দান করুন।
লেখক: মুহাদ্দিস ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
ক্রাইম জোন ২৪