পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই


উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের অন্যতম পুরোধা পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকার নিজ বাসভবন ‘মোহিনী গার্ডেন’-এ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।
অমরেশ রায় চৌধুরী বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় রাজশাহীর পঞ্চবটি শ্মশানে তাঁর দাহকার্য সম্পন্ন করা হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
১৯২৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলার চৌদ্দরশি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অমরেশ রায় চৌধুরী। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালে তাঁর মা রাজলক্ষ্মী রায় চৌধুরীর আগ্রহে উপমহাদেশের প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী ও সুরকার ফরিদপুরের সুধীর লাল চক্রবর্তীর কাছে তাঁর প্রথম হাতেখড়ি হয়। গুরু সুধীর লালের মৃত্যুর পর তিনি সিরাজগঞ্জের উচ্চাঙ্গ সংগীতবিদ হরিহর শুক্লার কাছে কয়েক বছর তালিম নেন।
পরবর্তীকালে ফরিদপুরের কোটালীপাড়ার সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর কাছে ধ্রুপদ, খেয়াল ও ঠুমরীতে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নেন। ময়মনসিংহের নেত্রকোনার বিশিষ্ট শিল্পী ও সুরকার নিখিলচন্দ্র সেনের কাছে আধুনিক গান, অতুলপ্রসাদ, রাগপ্রধান, নজরুল সংগীত ও শ্যামা সংগীত শেখেন। পরবর্তীকালে সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর সুযোগ্য পুত্র, প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী মানস চক্রবর্তীর কাছেও তিনি উচ্চাঙ্গ সংগীতে তালিম নেন।
১৯৪৫ সালে বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমি থেকে ম্যাট্রিক পাসের পর উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি নিষ্ঠার সঙ্গে সংগীতচর্চা চালিয়ে যান অমরেশ রায় চৌধুরী। ছোটবেলা থেকেই তাঁর রাগসংগীতের প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল। ১৯৬১ সাল থেকে তিনি রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকায় ‘মোহিনী নিকেতন’-এ বসবাস শুরু করেন। শিল্পকলা শাস্ত্রীয় সংগীতে অবদানের জন্য তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক এবং ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
ক্রাইম জোন ২৪