উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে বন্ডে সই, ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু


বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) বেলা ১১টায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলেয়া বেগম (৬০) নামেও এক নারী মারা যান। তিনি বরগুনা সদরের লতাবাড়িয়া এলাকার মো. নূর মোহাম্মদের স্ত্রী।
এ নিয়ে জেলায় চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সরকারি হিসাব অনুযায়ী এ সংখ্যা মাত্র ৭।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট আলেয়া বেগম ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। গত বৃহস্পতিবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করেন চিকিৎসকেরা। তবে পরিবারের সদস্যরা রোগীকে বরিশালে নিতে রাজি হননি।
এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে বন্ড সই নিয়ে বরগুনা হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা চালিয়ে যান। আজ শুক্রবার রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান।
আলেয়া বেগমের মেয়ে রুবিনা বলেন, ‘আমাদের কাছে মায়ের শারীরিক অবস্থা তেমন খারাপ মনে হয়নি। তিনি খুব ভালোভাবেই আমাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। তবে শুক্রবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি মারা যান।’
পুত্রবধূ সাথী আক্তার বলেন, ‘চিকিৎসকেরা আমার শাশুড়িকে বরিশাল রেফার করেছিল, কিন্তু আমরা নিয়ে যেতে পারিনি। তাই বন্ডে সই করে তাঁকে বরগুনাতেই পুনরায় ভর্তি করি।’
বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ২৫ জন। এ নিয়ে চলতি বছর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ২২২।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজাওনুর আলম বলেন, ‘আলেয়া বেগম ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পরেও পরিবারের লোকজন বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছিল। আমাদের হাসপাতালে যখন তাকে নিয়ে আসা হয়, তখন তার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। চিকিৎসকেরা তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা হাসপাতালে রেফার করে, কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাকে সেখানে নিতে রাজি ছিল না। তখন এখানের চিকিৎসকেরা পরিবারের কাছ থেকে বন্ড সই রেখে এখানেই চিকিৎসা দেয়। শুক্রবার সকালে রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এবং সে মারা যায়।’