মিসাইলের টার্গেট প্র্যাকটিসের জন্য টেসলার সাইবার-ট্রাক নেবে মার্কিন বাহিনী


টেসলার সাইবার-ট্রাক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ইলন মাস্ক দাবি করে আসছেন, এটির দেহ স্টেইনলেস স্টিলের এবং বুলেটপ্রুফ জানালাসহ এক অনন্য শক্তিশালী গাড়ি—যেন ভবিষ্যতের এক সাঁজোয়া যান। এবার সেই দাবি যাচাই করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী। মিসাইল ও অস্ত্রের আঘাতে এই বৈদ্যুতিক পিকআপ আসলেই কতটা টিকে থাকতে পারে, তা পরীক্ষা করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়ার জোন’-এর হাতে আসা নথি অনুসারে, বিমানবাহিনী দুটি সাইবার-ট্রাক কেনার পরিকল্পনা করেছে ‘টার্গেট ভেহিকল ট্রেনিং ফ্লাইট টেস্ট ইভেন্টস’–এর জন্য। তাদের যুক্তি হলো—ভবিষ্যতে শত্রু বাহিনী সামরিক কাজে সাইবার-ট্রাক ব্যবহার করতে পারে। তাই আগে থেকেই এই যান ধ্বংস করার কৌশল ও সক্ষমতা যাচাই করা প্রয়োজন।
নথিতে বলা হয়েছে, বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি আসতে পারে যখন শত্রুপক্ষ সাইবার-ট্রাকের মতো যান ব্যবহার করবে। এর ফলে বড় ধরনের আঘাতেও প্রত্যাশিত ক্ষতি নাও হতে পারে। তাই এই ধরনের পরিস্থিতি সম্পর্কে পূর্ব ধারণা রাখার জন্যই প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে।
দ্য ভার্জ জানিয়েছে, দুটি সাইবার-ট্রাক ছাড়াও মার্কিন বিমানবাহিনী মোট ৩৩টি বিভিন্ন ধরনের যান কেনার পরিকল্পনা করেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সেডান, পিকআপ, এসইউভি এবং বংগো ট্রাক। এসব যান নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডস মিসাইল রেঞ্জে টার্গেট প্র্যাকটিসে ব্যবহার করা হবে। তবে তালিকায় একমাত্র সাইবার-ট্রাকই নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড টেসলার গাড়ি।
ক্রয়ের আবেদনে সাইবার-ট্রাকের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন—স্টেইনলেস স্টিল এক্সোস্কেলেটন এবং ৪৮ ভোল্ট বৈদ্যুতিক স্থাপত্য।
মাস্ক নিজেও সাইবার-ট্রাকের সামরিক সম্ভাবনা নিয়ে অতীতে মন্তব্য করেছেন। ২০১৯ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে একটি এয়ার ফোর্স ইভেন্টে তিনি এর সামরিক ব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছিলেন। চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৫ সালের ক্রয় পরিকল্পনায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের সাঁজোয়া টেসলা কেনার প্রস্তাবও ছিল। এমনকি কূটনীতিকদের সাঁজোয়া যান হিসেবে টেসলার সাইবার-ট্রাক ব্যবহারের কথাও শোনা গিয়েছিল।
তবে বাজারে সাইবার-ট্রাকের জনপ্রিয়তা সম্প্রতি কমেছে। মাস্কের পূর্বাভাস ছিল বছরে এটি পাঁচ লাখেরও বেশি ইউনিট বিক্রি হবে। কিন্তু গত বছর বিক্রি হয়েছে ৫০ হাজারেরও কম। ব্র্যান্ড ইমেজ সংকটের কারণে বিক্রি আরও কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবু যদি বিমানবাহিনী এই দুটি ট্রাক কিনে নেয়, টেসলার বিক্রির খাতায় বাড়তি সংখ্যা যোগ হবে।