থাকছে স্থানীয়দের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা


দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষায় একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয়দের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দ্বীপটির প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য, দ্বীপের প্রকৃতির ক্ষতি কমিয়ে আবার সুস্থ ও জীবন্ত করে তোলার লক্ষ্যে, সেখানে পর্যটন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিবেশ সুরক্ষায় বেশ কিছু যুগান্তকারী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারা দেশের শপিংমলগুলোতে পলিথিন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান চলছে। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যে পাটের ব্যাগ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি যৌথ প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
এ ছাড়া, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করা হয়েছে। অবৈধ ৮৩০টি ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং সাভার ও আশুলিয়াকে ‘দূষিত বায়ুমণ্ডল’ এলাকা হিসেবে ঘোষণার প্রক্রিয়া চলছে। অবৈধ সিসা কারখানা বন্ধ এবং শব্দ দূষণ রোধে তরুণদের যুক্ত করে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।
বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কক্সবাজার ও সোনাদিয়া থেকে ১০ হাজার ৩২২ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। পূর্বাচলে ১৪৪ একর এলাকাকে বিশেষ জীববৈচিত্র্য এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বেদখল হওয়া আরও ৫ হাজার ৯৩ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার করে সেখানে নতুন করে বনায়ন করা হয়েছে। ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা উৎপাদন ও রোপণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মধুপুর শালবন এবং হাতির চলাচলের পথ তৈরিতে চুনতি ও শেরপুরের বন পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানব-হাতি সংঘাত কমাতে ১৫৯টি ‘এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম’ গঠন করা হয়েছে। বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীদের সুরক্ষিত করা এবং বিলুপ্তপ্রায় ময়ূর ফিরিয়ে আনার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। জাতীয় উদ্যান ও ইকোপার্কগুলোতে প্লাস্টিকের ব্যবহার ও পিকনিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী আইন আধুনিকীকরণের কাজও চলছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে ৩৫১ কোটি টাকার ৪১টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এ ছাড়া ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ চূড়ান্ত হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের এসব উদ্যোগ দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং একটি জলবায়ু প্রতিরোধী ও টেকসই বাংলাদেশ গড়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।