আইইউবিএটির ছাত্রকে ‘চোর’ বলে বাসে তুলে গণপিটুনি


রাজধানীর উত্তরায় ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে বাসে তুলে রেজোয়ান হোসেন শাকিল নামের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
উত্তরার আবদুল্লাহপুরে আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনির শিকার রেজোয়ান হোসেন শাকিল (২৪) ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) টেকনিক্যাল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বর্তমানে তিনি উত্তরায় আহসানিয়া মিশন ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, আজ আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিকাশ পরিবহনের একটি বাস শাকিলের গায়ে লাগিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদ করলে তাঁকে বাসে তুলে মারধর করেন চালক, হেলপার ও স্টাফরা। পরে তাঁরা শাকিলকে ‘চোর’ আখ্যা দিলে বাসের যাত্রীরাও তাঁকে পিটুনি দেন। এরপর তাঁকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
আইইউবিএটির ছাত্ররা বিষয়টি পরে জানতে পারলে তাঁরা প্রথমে আসমানী পরিবহনের চারটি বাস আটক করে বিক্ষোভ করেন। পরে তাঁরা আসমানী পরিবহনের বাসগুলো ছেড়ে বিকাশ পরিবহনের তিনটি বাস আটকে রাখেন। এ ছাড়া ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কে রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
আইইউবিএটির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে জানান, আবদুল্লাহপুরের আরএসআর ফিলিং স্টেশনের সামনে কাঁদা ও গর্ত রয়েছে। এ কারণে শাকিল রাস্তার ডান পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ওই সময় বিকাশ পরিবহনের একটি বাস তাঁকে লাগিয়ে দেয়। শাকিল প্রতিবাদ করলে বাসের একজন কলার ধরে, আরও একজন পিছন দিক দিয়ে ধাক্কা মেরে তাঁকে বাসের ভেতরে তোলেন। তারপর তাঁরা মারধর শুরু করেন। বাসযাত্রীরা কী হয়েছে, জানতে চাইলে মারধরকারীরা বলেন—‘চোর’ ‘চোর’। তখন তাঁরাও তাঁকে ‘চোর’ ‘চোর’ বলতে বলতে পিটুনি দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেন।
মেহেদী হাসান মানিক নামের আরও এক ছাত্র বলেন, ঘটনাটি জানার পর আইইউবিএটির ছাত্ররা ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তার দুই পাশে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। প্রথমে আসমানী পরিবহনের বাস আটক করা হয়েছিল। পরে সেগুলো ছেড়ে দিয়ে বিকাশ পরিবহনের বাস আটকানো হয়।
আবদুল্লাহপুরে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, ছাত্রটি শুধু বলেছিলেন, হলুদ রঙের একটি বাসের লোকজন তাঁকে মারধর করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে বাসটি আটক করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, ‘একজন ছাত্রকে বাসের লোকজনের মারধর করার অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু কোন বাসের লোকজন মারধর করেছে, সেটি জানা যায়নি। আমরা বাসটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। সেই সঙ্গে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’