জুলাই যোদ্ধাকে ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে পুলিশে দেওয়ার অভিযোগ


লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে জামায়াতের মিছিল শেষে দুই পক্ষের হামলায় চারজন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে উপজেলার হাজিরহাট বাজারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত মিছিল শেষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় জামায়াতের হাজিরহাট বাজার শাখার সভাপতি আইয়ুব আলী, আল মাহমুদ ওমর, জুলাই যোদ্ধা আইমান তাকিবসহ চারজন আহত হন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা নিয়ে রাতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আইমান তাকিবের মা উপজেলা মহিলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি উম্মে কুলছুমের দাবি, একটি পক্ষ মিছিলে না যাওয়ায় ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে তাঁর ছেলেকে দফায় দফায় এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে পুলিশে দেওয়া হয়।
জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কমলনগরের হাজিরহাট বাজারের জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ একটি বিজয় মিছিল করে। মিছিল শেষে তাদের সমাবেশ চলছিল। আগের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সময় আল মাহমুদ ওমর জামায়াতের হাজিরহাট বাজার শাখার সভাপতি আইয়ুব আলীকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেন। পরে তাৎক্ষণিক আইয়ুব আলী, তাঁর ভাই জামায়াত নেতা মো. ইউনুছসহ আইয়ুব আলীর অনুসারীরা আল মাহমুদ ওমর ও তাঁর বন্ধু আইমান তাকিবকে বেধড়ক পেটান।
পরে জনরোষ থেকে বাঁচাতে তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গতকাল রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায় আয়মান একজন জুলাই যোদ্ধা।
এ বিষয়ে হাজিরহাট বাজার শাখা জামায়াতের সভাপতি আইয়ুব আলী বলেন, ‘মিছিল শেষে আইমান ও ওমর আমাকে নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তি করে। পরে আমি তাদের ডেকে বিষয়টি জানতে চাই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অতর্কিত আমার ওপর হামলা চালায়।’
এদিকে জুলাই যোদ্ধা আইমান তাকিবের মা সাবেক মহিলা জামায়াতে সেক্রেটারি উম্মে কুলছুম বলেন, ‘আমি ১৮ বছর ধরে মহিলা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় প্রায় এক বছর জেল খেটেছি। আমার ছেলে লক্ষ্মীপুরে খুনি হাসিনার পতন ঘটাতে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। যে দলের জন্য বহু ত্যাগ স্বীকার করেছি, ওই দল এখন মিছিলে না যাওয়ায় আমার ছেলেকে ছাত্রলীগ বানিয়ে পুলিশে দেয়। এ ছাড়া রাতভর অনেক নাটকের পর আমি যেন এ বিষয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করতে না পারি, তার জন্য মুচলেকা নিয়ে আমার ছেলেকে মুক্তি দেয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল খায়ের বলেন, ‘দুই পক্ষই আমাদের লোক। আগের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা পুলিশের সহযোগিতা নিয়েছি। আর এ বিষয়টি আমরা বসে সমাধান করার চেষ্টা করছি।’
কমলমগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জামায়াতের মিছিলে শেষে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে দুজনকে আটক করা হয়। পরে রাতেই জামায়াতের লোকজন এসে তাঁদের ছাড়িয়ে নেন।