টানা বর্ষণে পাহাড়ধস, প্রশাসনের মাইকিং


টানা ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও রাঙামাটির বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা উপজেলা সড়কের ৯ মাইলসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধস হয়েছে। আজ রোববার সকাল থেকে সেনাবাহিনী, সড়ক বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সড়ক থেকে ধসে পড়া মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন। বিকেলের দিকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আখতার জানান, মাটি সরানোর কাজে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সড়ক বিভাগ কাজ করছে।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান জানান, বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা সড়কের ৯ ও ১৪ কিলোমিটার এলাকায় পাহাড় ধসে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সড়ক বিভাগের সদস্যরা সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে যান চলাচলের উপযোগী করতে কাজ শুরু করেন।
এদিকে টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কে খাগড়াছড়ি সদরের চম্পাঘাট এলাকায় পাহাড় ধসে পড়েছে সড়কের ওপর। এতে খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়াপাড়া সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এ ছাড়া মানিকছড়ি উপজেলার মুসলিমপাড়া এলাকায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে পড়েছে। ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ক্ষতিগ্রস্ত মো. মমিন মিস্ত্রি বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিতে গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে মাটির ঘরের দেয়াল ধসে পড়ে, আসবাবপত্র মাটির চাপায় পড়ে রয়েছে। আমরা পাশে ছেলের সঙ্গে কথা বলছিলাম। পুরো রাত রান্নাঘরে কাটিয়েছি।’
খাগড়াছড়িতে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে চেঙ্গী, মাইনী ও ফেনী নদীর পানি বেড়েছে। ফলে বন্যার আতঙ্কে রয়েছেন নদীর তীরের বাসিন্দারা।
পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের সরে যেতে বারবার মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার উপপরিচালক ও পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পড়ে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আমরা লোকজনের জন্য খাবার ও প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করেছি।’
দীঘিনালার দ্বিতীয় শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের বেলুন মেকার সুভূতি চাকমা জানান, সকাল ১০টা পর্যন্ত ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘আমরা মাইকিং করছি, স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রয়েছে। সব ইউএনওকে সতর্ক করা হয়েছে এবং আমরা সব আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখার জন্য বলেছি। আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি।’