শিরোনাম

জ্যোতিদের জন্য নেদারল্যান্ডসও মেলেনি

জ্যোতিদের জন্য নেদারল্যান্ডসও মেলেনি

এক শ দিনের বেশি সময় কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। মাঠের বাইরের এই দীর্ঘ বিরতিতে বিশ্বকাপের জন্য ভালো প্রস্তুতি নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় শুরু হতে যাচ্ছে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে ২ অক্টোবর, কলম্বোয় পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।

গত তিন মাসে দেশে বা বিদেশে কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি বাংলাদেশ নারী দল। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল তিন মাসের বেশি সময় আগে। এত দীর্ঘ বিরতির পরও বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এখনো প্রস্তুতিমূলক কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজন করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

প্রায় এক মাস ধরে সিলেটে চলেছে নারী দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প। এখানে মূলত ফিটনেস ও স্কিল নিয়েই কাজ করেছেন মেয়েরা। এই ক্যাম্প শেষ হয়েছে গত ২৮ জুলাই। নারী দলের সদস্যরা ঢাকায় ফিরেছেন এবং বর্তমানে বিশ্রামে তাঁরা। জানা গেছে, ৭ আগস্ট থেকে বিকেএসপিতে শুরু হবে পরবর্তী প্রস্তুতি ক্যাম্প, চলবে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। সেখানে কিছু ম্যাচের আবহ তৈরি করে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলানো হতে পারে, তবে সেটি পূর্ণাঙ্গ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সিরিজ নয়।

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম নারী দলের কার্যক্রমও দেখছেন বিভাগটির প্রধান হিসেবে। পুরুষ দলের এশিয়া কাপ শুরুর আগে ভারত সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ায় আকস্মিক তৈরি এক মাসের বিরতিতে লিটনদের খেলার মধ্যে রাখতে বিসিবি নেদারল্যান্ডসকে এনে প্রস্তুতিমূলক দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজন করতে চাইছে। সিরিজটি হতে পারে আগস্টের শেষ সপ্তাহে। সেখানে নারী দল অংশ নিতে যাচ্ছে অধিক মর্যাদাপূর্ণ ওয়ানডে বিশ্বকাপে; অথচ তাদের প্রস্তুতি ঠিকঠাক সারতে এখনো কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচের সূচি চূড়ান্ত করতে পারেনি বিসিবি।

নারী দলের নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ শিপন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে একটি আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলতে পারলে ভালো প্রস্তুতি হতো। আমরা কিছু দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার জন্য চেষ্টা করেছি। আসলে আমরা বিশ্বকাপে খেলার জন্য কোয়ালিফাই করেছি অনেকটা শেষ মুহূর্তে। তবে যেসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তাদের বোর্ড অতিরিক্ত খরচ করে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলতে চায়নি। আর আমাদের পক্ষেও বাইরের কোনো দলকে এনে খরচ করে সিরিজ আয়োজন করা কঠিন। আমরা বিকেএসপিতে নারী দলের ক্যাম্প থেকে দুটি দল গঠন করে বিসিবির অনূর্ধ্ব-১৫ পুরুষ দলের সঙ্গে একটি চ্যালেঞ্জ কাপ (১৮-২৮ আগস্ট) খেলেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেব। আমাদের কাছে এর চেয়ে বেশি বিকল্প এখন নেই।’

বিসিবির নারী বিভাগের প্রধান ফাহিমের দাবি, আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে তাঁরা কোনো কার্পণ্য করেননি। গতকাল আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘খরচের ব্যাপারই নেই। এখন এ রকম বিষয় নেই। ওরা তো কদিন আগে ছেলেদের মতো সিলেটে ব্যয়বহুল ক্যাম্প করল। আমরা যেকোনো দলকেই আনতে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু সবার সূচি আগেই ঠিক হয়ে গেছে। আসলে আমরা শেষ মুহূর্তে কোয়ালিফাই করায় আর ভালো দলের সঙ্গে সিরিজ আয়োজন করতে পারছি না। ভালো দলগুলো সব আগেই নিজেদের সূচি নিশ্চিত করে ফেলেছে। আনতে পারতাম কোনো দল, তবে সেসব দলের সঙ্গে খেলে খুব ভালো হতো না।

এশিয়া কাপের প্রস্তুতি সারতে লিটনদের জন্য নেদারল্যান্ডসকে আনা হচ্ছে, জ্যোতিদের ক্ষেত্রে এ রকম দলও মেলেনি? ফাহিম বললেন, ‘নেদারল্যান্ডস অত খারাপ দল না। সে মানের দল পেলে আমরা অবশ্যই আনতাম।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারী দলের এক ক্রিকেটার বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সিরিজ হলে সেটা আমাদের জন্য দারুণ হতো। নিজেরা চেষ্টা করছি ফিটনেস ও স্কিল উন্নত করতে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা ছাড়া বিশ্বকাপে ভালো করা কঠিনই হবে। এত বড় আসরের আগে সিরিজ না খেলে নামা মানে সীমিত প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামা। আর নারী ক্রিকেটে সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি সব সময়ই ছিল।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button