ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলন ৪ আগস্ট


রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি। নতুন এই ইউনিভার্সিটির নাম আগেই প্রস্তাব করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সাত কলেজের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া পাবলিক ইউনিভার্সিটির একটি মডেলও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতোদিন এসব কার্যক্রম আড়ালে চললেও ইউনিভার্সিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সামনে আসতে যাচ্ছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ উদ-দৌলা খানের পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়, ঢাকা মহানগরীর সরকারি সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসংক্রান্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিতকরণের লক্ষ্যে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে ইউজিসির নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। গেল বছরের ২৯ ডিসেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে সভাপতি করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিমউদ্দীন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৪ আগস্টের সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফায়েজ ও সদস্য অধ্যাপক তানজিমউদ্দীন খান উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর অন্যান্য প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত থাকবেন। সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরারেরও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির মডেল কেমন হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া কবে নতুন ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারি হতে পারে, ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার পরবর্তী ধাপগুলো কেমন হতে পারে, কবে ইউনিভার্সিটিটি ফুল স্কেলে কার্যক্রম শুরু করতে পারে— সে সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া হবে।
এর আগে, ৯ জুলাই সাতটি কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ বা সমমানের একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অধীনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরু করার অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাশেমের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ৭ জুলাইয়ের একটি স্মারকের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ কাঠামোর আওতায় ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এরপর গত ২৯ জুলাই সাত কলেজের স্নাতক প্রথমবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি। এসব কলেজকে নিয়ে হতে যাওয়া নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রথমবারের মতো ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। আগামী ৩ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২২ ও ২৩ আগস্ট।
এদিকে, আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারির দাবি আগে থেকেই জানিয়ে আসছিল সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ৫ আগস্টের মধ্যে অধ্যাদেশ না আসলে আগামী ৬ আগস্ট থেকে অধ্যাদেশ জারির পূর্ব পর্যন্ত তারা আবার মাঠের কর্মসূচিতে ফিরে যাবেন।
সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. নাঈম হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৭ মে ইডেন মহিলা কলেজে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাদেশ জারি করা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এক মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ থেকে আশানুরূপ কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ না হওয়ায় বর্তমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পরিচয়হীনতার মতো সংকটগুলোও কাটছে না। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে অধ্যাদেশ জারি না হলে ৬ আগস্ট থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।