জাককানইবিতে নির্মাণাধীন হলের ছাদ ভেঙে আহত ১০


ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) নির্মাণাধীন হলের ছাদ ধসে অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে বিদ্রোহী হলের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলাকালে হঠাৎ একটি অংশ ধসে পড়ে। এ সময় সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের কয়েকজন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েন। পাশে থাকা শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণকাজে নিম্নমানের রড ব্যবহার করা হয়েছে এবং রড বাঁধার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল সাধারণ পাটের দড়ি। শ্রমিকদের কেউই হেলমেট কিংবা সুরক্ষামূলক পোশাক পরিহিত ছিলেন না। ছাদ ঢালাইয়ের সময় শ্রমিকদের কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জামই ছিল না।

এই ভবনে কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, ‘আমি প্রায় ১০ বছর ধরে এ ধরনের নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু কখনো বৃষ্টির মধ্যে ছাদ ঢালাই করতে দেখিনি। কাজটি অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছিল। ইঞ্জিনিয়ার স্যার কী ভেবে বৃষ্টির মধ্যে ছাদ ঢালাই করতে বলেছেন, আমার জানা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি মো. রাহাত হাসান দিদার মূলত পরিবেশ প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের অভিযোগ, তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পেশাগত অভিজ্ঞতা ছাড়াই এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। দপ্তরের আরও কয়েকজন প্রকৌশলীর ক্ষেত্রেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে—যাঁরা প্রকৌশলী না হয়েও সাইট সুপারভিশনের দায়িত্বে রয়েছেন।
তবে প্রকৌশলী রাহাত হাসান দিদার বলেন, সবকিছুই পরিকল্পনা অনুযায়ী করা হয়েছিল। বৃষ্টির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
নির্মাণ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান জানান, ছাদধসের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেও এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রকল্প ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মাহবুবুর রহমানকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।