নওগাঁ সদরেই হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়, জমি অধিগ্রহণে অনুমোদন


নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নওগাঁ সদর উপজেলার শালুকা, চকরামপুর ও পাথুরিয়া মৌজায় ৯৬ দশমিক ৮১ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হাছানাত আলী।
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনেও এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত জমিগুলো নওগাঁ পৌর শহরসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। সম্ভাব্যতা যাচাই এবং স্থান নির্ধারণপ্রক্রিয়া শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ জমিগুলো অধিগ্রহণের জন্য অনুমতি দেয়।
নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হাছানাত আলী বলেন, ‘নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য নওগাঁ সদর উপজেলার নওগাঁ পৌর শহরসংলগ্ন কয়েকটি মৌজায় জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সম্ভাব্যতা যাচাইপ্রক্রিয়া শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত এলাকায় জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে।
হাছানাত আলী আরও বলেন, ‘সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ আমরা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য আপাতত ৯৬ দশমিক ৮১ একর জমি অধিগ্রহণের অনুমতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ শুরু হবে। পাশাপাশি একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতিও চলবে।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ’ নামে একটি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়নের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে বিলটি পাস হয়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন হয় ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি। ওই দিন অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে শুধু ‘নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়’ নির্ধারণ করে। নাম পরিবর্তনের পর এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন পাওয়া যায়নি। ফলে শিক্ষার্থী ভর্তি, ক্লাস শুরু বা বিভাগ খোলার কার্যক্রম এখনো স্থগিত রয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে শহরের মডেল টাউন এলাকার একটি ভাড়া ভবন থেকে। স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় কর্মপরিকল্পনায় কিছুটা ধীরগতিও লক্ষ করা যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, জমি অধিগ্রহণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ তৈরি হবে নিজ জেলার মাটিতেই।
স্থানীয় সচেতন নাগরিক নাইস পারভীন বলেন, ‘নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণের খবর শুনে আমরা ভীষণ আনন্দিত। এটি এ এলাকার শিক্ষার অগ্রগতির পথে মাইলফলক হবে। নওগাঁসহ আশপাশের জেলার শিক্ষার্থীরা এখন উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে—এটা সত্যিই গর্বের।’