নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না: আমীর খসরু


নির্বাচন না হওয়ায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না; বিনিয়োগও হচ্ছে না। বিপ্লবের পর যেসব দেশ নির্বাচন বিমুখ হয়েছে, সেসব দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দায়বদ্ধ প্রশাসনের জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আজ রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘উত্তাল জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ রাজনীতিবিদ, ছাত্র-জনতার অবদান এবং আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে ভাসানী জনশক্তি পার্টি।
সভায় আমীর খসরু বলেন, ‘দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না, হচ্ছে না বিদেশি বিনিয়োগও। আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে। বিপ্লবের পর যেসব দেশ নির্বাচন বিমুখ হয়েছে, সেসব দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দায়বদ্ধ প্রশাসনের জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।’
‘জুলাই আন্দোলন নিয়ে বিভাজন হচ্ছে। তবে আন্দোলন হাইজ্যাক করার সুযোগ নেই। যাদের নির্বাচন ভীতি রয়েছে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পরামর্শ দিচ্ছি। জুলাই আন্দোলন নতুন কিছু না। বাংলাদেশের মানুষের ডিএনএতে এটা আছে। হাসিনার যাওয়া ছাড়া আর কোনো গতি ছিল না। ৫ আগস্ট তাঁর পতন না হলে আমরা বাড়ি ফিরে যেতাম না। আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকত।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল মালিকানা ফিরে পাওয়া, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়া। আমরা আন্দোলনের জায়গাটায় কোনো বিভাজন চাই না। বিএনপির নেতা-কর্মী আহত-নিহত বেশি হলেও বিএনপি আন্দোলনের কৃতিত্ব দাবি করেনি। আন্দোলনকে সফল করতে হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার আসতে হবে। গণতন্ত্রের একমাত্র ভালো দিক হচ্ছে, সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জবাবদিহির ভয়ে থাকেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিশ্বের যেসব দেশ বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে, তারা যত তাড়াতাড়ি নির্বাচিত সরকার গঠন করেছে, তত তাড়াতাড়ি দেশের উন্নতি হয়েছে। আর যেসব দেশে নির্বাচিত সরকার আসতে দেরি করেছে, তারা ব্যর্থ রাষ্ট্র বলে পরিচিতি পেয়েছে। বিভেদ না থাকলে তো রাজনীতি চলবে না। আমরা শেখ হাসিনার বাবার মতো বাকশাল করতে বসিনি। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষের চিন্তাভাবনার যে পরিবর্তন হয়েছে, সেই পরিবর্তন মাথায় নিয়ে রাজনৈতিক দলের কাজ করতে হবে।’
ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার প্রমুখ।