বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান হান্নানের বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা অনুমোদন


বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) শেখ আবদুল হান্নান ও তাঁর স্ত্রী তাহমিদা বেগমের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিপুল অর্থের সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার (২৭ জুলাই) দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন কমিশনের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন। দুদকের উপপরিচালক তানজির হাসিব সরকার বাদী হয়ে মামলা দুটি করবেন।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শেখ আবদুল হান্নান জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৫০৬ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজের দখলে রেখেছেন। একই সময়ে তিনি নিজের নামে ছয়টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২৭ কোটি ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭০১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
এ ছাড়া তিনি অপরাধলব্ধ এই অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।
অন্যদিকে শেখ আবদুল হান্নানের স্ত্রী তাহমিদা বেগম স্বামীর সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে ১ কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ৩০৪ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজের দখলে রেখেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া তিনি নিজ নামে থাকা ৩২টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ১৮ লাখ ১৯ হাজার ১২৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
এই অভিযোগে তাহমিদা বেগম ও তাঁর স্বামী শেখ আবদুল হান্নানের বিরুদ্ধে দুদক আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় একটি পৃথক মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত শেখ আবদুল হান্নান, তাহমিদা বেগম ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশে তাঁদের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং ঢাকার অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও জমি জব্দ করা হয়। এসব পদক্ষেপের ফলে তদন্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমে এসেছে বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধানের মতো উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা যদি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকাকালে এ ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকেন, তবে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা প্রাপ্ত তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে স্বচ্ছ ও কঠোর অনুসন্ধান করছি।’
অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, দুদকের অনুসন্ধান দল মামলা করার পর পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে তদন্তকাজের প্রস্তুতি শুরু করবে। তদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।