টাঙ্গাইলের মধুপুরে কাঁঠালের বাম্পার ফলন


টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলতি মৌসুমে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে কাঁঠাল পেকে যাওয়ায় বাজারে এই ফলের আধিক্য বেড়েছে। তবে রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে কাঁঠালের দাম ওঠানামা করায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর দাম নাগালের মধ্যে থাকায় খুশি ভোক্তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে মধুপুরে ১১০ হেক্টরে কাঁঠালের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে হেক্টরপ্রতি প্রায় ৪০ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এই এলাকার মাটি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পাশাপাশি বন্যামুক্ত এলাকা হওয়ায় কাঁঠাল সুস্বাদু হয়ে থাকে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মধুপুরে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠালের আবাদ হয় না, কিন্তু অধিকাংশ বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে কাঁঠালগাছ শোভা পায়। ওই সব গাছে এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। বৈশাখ মাস থেকেই কাঁঠাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসের কিছু সময় পর্যন্ত কাঁঠাল পাওয়া যায় মধুপুরের বাজারগুলোতে।
মধুপুরের জলছত্র কৃষি মার্কেটে প্রতিদিন ব্যাটারিচালিত রিকশাযোগে কাঁঠাল নিয়ে আসেন কৃষকেরা। এই বাজারে প্রতিদিন মধুপুর, ঘাটাইল, ফুলবাড়িয়া, কেন্দুয়া, জামালপুর, শেরপুর ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলার চাষি ও পাইকারেরা কাঁঠাল নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। দূরদূরান্ত থেকে আসা পাইকারেরা কিনে স্তূপ করে রেখে ট্রাকযোগে ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে থাকেন।
রানিয়াদ গ্রামের ডা. ছানোয়ার হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমার বাড়ির আঙিনায় ৩০টি কাঁঠালগাছে কাঁঠাল গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি ধরেছে। পাইকারেরা ৪৫ টাকা দরে কাঁঠাল কিনে নিয়েছেন।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ২০-৫০ টাকা দরে কাঁঠাল কিনে গাড়িতে ভরে ঢাকা, সিলেট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার বিক্রি করি।’
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা বলেন, ‘কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। মধুপুরে চলতি মৌসুমে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাঁঠালের কোনো অংশই ফেলে দিতে হয় না। কাঁঠালের রসে থাকে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম। কাঁচা কাঁঠাল ও কাঁঠালের বিচি দিয়ে রসনাবিলাস হয়। কাঁঠালের খোলস ও পাতা গবাদি পশুর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাঠ দিয়ে তৈরি হয় আসবাবপত্র। এসব কারণেই মানুষের কাঁঠাল চাষে আগ্রহ বেশি থাকে। আমরাও কাঁঠালের বাগান করার জন্য কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। কাঁঠাল চাষে আগ্রহী করার জন্য কৃষকদের মধ্যে বিনা মূল্যে কাঁঠালের চারাও বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকদের রাস্তার পাশে কাঁঠালের চারা রোপণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’