শিরোনাম

ভুল তথ্য দিয়ে জুলাই শহীদের তালিকায় নাম, পারিবারিক দ্বন্দ্বে বেরিয়ে এল সত্য

ভুল তথ্য দিয়ে জুলাই শহীদের তালিকায় নাম, পারিবারিক দ্বন্দ্বে বেরিয়ে এল সত্য

জুলাই আন্দোলনে অংশ না নিলেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে শহীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় বশির সরদার (৪০) নামের এক ব্যক্তির নাম। কিন্তু পরিবারে সরকারি অনুদানের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে প্রকাশ্যে আসে মূল তথ্য। পরে ওই ব্যক্তির নাম শহীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীতে।

জানা গেছে, বশির সরদার পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের সেকান্দার সরদারের ছোট ছেলে। জেলা শহরের নিউমার্কেট এলাকায় একটি চায়ের দোকান চালাতেন তিনি। গত বছরের ৩ জুলাই পায়ে লোহা ঢুকে আহত হন বশির। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। তবে ওই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বশির সরদার জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনে আহত হয়েছেন। পরে তাঁর নাম জুলাইয়ের আন্দোলনে শহীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সরকার থেকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আরও ২ লাখ টাকা অনুদানও দেওয়া হয়। সম্প্রতি এই অর্থের ভাগ নিয়ে পরিবারের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব শুরু হলে বশিরের বড় ভাই নাসির সরদার গত ২২ জুলাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে বশিরের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে বশির সরদারের নাম শহীদের তালিকা থেকে বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি অনুদানের সঞ্চয়পত্র স্থগিতের সুপারিশ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পটুয়াখালীর সমন্বয়ক মিরাজ ইমতিয়াজ বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ ছাড়াই কাগজে-কলমে শহীদ বানিয়ে অনুদান নেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি শুধু শহীদের মর্যাদাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে না, বরং পুরো আন্দোলনের ইতিহাসকেই কলঙ্কিত করে।’

জানতে চাইলে বশিরের বড় ভাই নাসির সরদার বলেন, ‘প্রথমে অনুদানের আশায় ভাইকে শহীদ হিসেবে পরিচয় দিই, কিন্তু পরে অনুতপ্ত হয়ে আমি নিজেই পুরো ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করি। আমি আমার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইছি।’

নিহতের বাবা সেকান্দার সরদার অভিযোগ করে বলেন, ‘চিকিৎসা বাবদ ৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছি, অথচ পুত্রবধূ রেবা (বশিরের স্ত্রী) পুরো অনুদানের অর্থ নিজের কাছে রেখেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে বশিরের স্ত্রী রেবা আক্তার বলেন, ‘স্বামীর চিকিৎসা করাতে ঋণ করতে হয় এবং পরিবারের চাপেই ভুল তথ্য দিতে বাধ্য হই।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button