নামাজের কাফফরা কী, আদায় করতে হয় কীভাবে


নামাজ ইসলামের অন্যতম রোকন ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মুসলমানদের ওপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে অনেকের জীবনে এমন মুহূর্ত আসে, যখন নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বিশেষ করে জীবনের অন্তিম সময়ে মৃত্যুশয্যায় থাকা ব্যক্তিরা এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। এই পরিস্থিতিতে নামাজ ছুটে গেলে তাঁদের ব্যাপারে ইসলামের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে।
ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠলে সে নামাজ কাজা করতে হবে। আর যদি ইন্তেকাল করেন, তাহলে তাঁর মৃত্যুর পর ছুটে যাওয়া নামাজের কাফফারা দিতে হবে। মৃত্যুর আগে ওই ব্যক্তি যদি কাফফারা আদায়ের জন্য অসিয়ত করে যান, তাহলে তাঁর রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে স্বাভাবিক নিয়মে তাঁর কাফন-দাফন করার পর, যদি কোনো ঋণ থাকে, তাহলে তা পরিশোধ করে অবশিষ্ট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ দিয়ে কাফফারা আদায় করতে হবে। আর অসিয়ত না করে থাকলে, ওয়ারিশদের জন্য মৃতের নামাজের কাফফারা আদায় করা আবশ্যক নয়। তবে ওয়ারিশদের জন্য উচিত তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে হোক অথবা সবার সম্মতিক্রমে সম্মিলিত সম্পদ থেকে হোক, কাফফারা আদায় করে দেওয়া।
কাফফারার পরিমাণ হলো, প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে বিতর নামাজ যোগ করে ছয় ওয়াক্ত নামাজ হিসাব করে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজারমূল্য অসহায়কে দান করে দেওয়া। অথবা প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পরিবর্তে একজন অসহায়কে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়ানো। (ফাতাওয়া শামি: ২ / ৭২)
কাফফারার হিসাবের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, মুমূর্ষু অবস্থার দিনগুলোতে ওই ব্যক্তি যদি কোনো দিন সম্পূর্ণ অজ্ঞান থেকে থাকেন, তাহলে যে কয় দিন অজ্ঞান ছিলেন সে কয় দিনের নামাজের কাফফারা দিতে হবে না। আর স্বজ্ঞানে থাকা অবস্থায় যদি সেই দিনগুলোতে মাথা নেড়ে ইশারায় নামাজ আদায় করার সক্ষমতাও তাঁর না থাকে, তাহলে ওই দিনগুলোরও কাফফারা দিতে হবে না। যেসব দিনে তাঁর ইশারায় নামাজ আদায়ের সক্ষমতা ছিল, সেই দিনগুলোর কাফফারা দিতে হবে।