আমতলীতে কালভার্ট-ড্রেন দখলে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে অর্ধলক্ষ মানুষ


আমতলী পৌর শহরের পানি নিষ্কাশনের কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে বসতবাড়ী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ফলে শহরে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে জমানো পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, মশা ও মাছির জন্ম হয়ে পরিবেশ চরম আকারে দূষিত হচ্ছে। দ্রুত পৌর শহরের অর্ধলক্ষ মানুষকে রক্ষায় কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ রয়েছে, পৌর কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠা থেকে পৌর শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল নাজুক। ২০০০ সালে পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য বাঁধঘাট চৌরাস্তা, পৌর লেক ও মিঠাবাজার এলাকায় কয়েকটি কালভার্ট ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়। এগুলো দিয়েই মূল শহরের পানি বের হতো। কিন্তু গত ২৫ বছরে এসব কালভার্ট ও ড্রেন দখল করে নির্মাণ হয়েছে শতাধিক স্থাপনা। ফলে পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে শহরের বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
বুধবার আমতলী পৌর শহরের চৌরাস্তা কালভার্ট, মিঠাবাজারসহ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কালভার্ট দখল করে মামুন, জামাল প্যাদা, মনির প্যাদা ও হাসান মৃধাসহ শতাধিক ব্যক্তি স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ওই স্থাপনার খুঁটিতে কালভার্টের মুখ আটকে আছে। ওই খুঁটির সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা জমে কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কালভার্ট দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। অন্যদিকে মিঠাবাজার ড্রেনেজের মুখ সচল থাকলেও পেছনের অংশ আটকে ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন। পৌরসভার লেকে কালভার্ট উঁচু হওয়ায় তা দিয়ে তেমন পানি নামছে না। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সবুজবাগ, কলেজ রোড, মিঠাবাজার, ওয়াপদা, ফেরিঘাট সড়ক, মাছবাজার এলাকা ও খোন্তাকাটায় চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ওই পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
সবুজবাগের বাসিন্দা দীলিপ মাঝি, লালু মাঝি, গোপাল মাঝিসহ অনেকেই বলেন, ‘জলাবদ্ধতায় ১৫-২০টি পরিবার পানির মধ্যেই থাকছি। পচা গন্ধে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।’
খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা ইদ্রিস আলী, সোহেল মল্লিক, ইউসুফ আলী ও রেজাউল করিম জানান, জলাবদ্ধতায় অন্তত ৪০টি পরিবার ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে।
ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া দাবি করেন, ‘আমি ড্রেনের ওপরে পাকা ভবন করিনি, রান্নাঘরের জন্য খুঁটি দিয়েছি।’
এ বিষয়ে আমতলী পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘কালভার্ট ও ড্রেনের মুখে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কারের জন্য লোক পাঠানো হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ‘দ্রুত দখলদারদের উচ্ছেদ করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’