মেসির এই দেহরক্ষীর আসল পরিচয় কী


লিওনেল মেসির সঙ্গে ধারেকাছে কেউ এলেই হলো। দেহরক্ষী ইয়াসিন চেউকো দ্রুত তাঁকে ধরে ফেলেন। বিমানের চেয়ে যেন ক্ষিপ্রগতিতে ছুটতে পারেন চেউকো। তাঁর কারণে তাই ভক্ত-সমর্থকেরা মেসির সঙ্গে সেলফি তোলা তো দূরে থাক, অটোগ্রাফ পর্যন্ত নিতে পারেন না।
ইন্টার মায়ামিতে মেসি যেদিন থেকে খেলছেন, তখন থেকে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের ছায়া হিসেবে কাজ করছেন চেউকো। স্টেডিয়াম তো বটেই, এমনকি বাইরেও মেসিকে অতন্দ্রপ্রহরীর মতো পাহারা দিয়ে থাকেন চেউকো। অনেকবার নিষিদ্ধও হয়েছেন মেসির দেহরক্ষী। এই তো ৩১ জুলাই লিগস কাপের একটি ম্যাচের ঘটনা। চেজ স্টেডিয়ামে লিগস কাপের ইন্টার মায়ামি-অ্যাটলাস ম্যাচ শেষে মাঠে ঢুকে পড়েন চেউকো। যখন দুই দলের ফুটবলাররা গল্প করতে ব্যস্ত, তখন এভাবে মেসির দেহরক্ষীর মাঠে ঢুকে পড়াটা মেনে নিতে পারেননি অনেকে। ইএসপিএনের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চেউকো লিগস কাপের বাকি ম্যাচগুলোর জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন।
অ্যাটলাসের ম্যাথিউস দোরিয়া তখন চেউকোর হঠাৎ মাঠে ঢুকে পড়া নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ইন্টার মায়ামির বিপক্ষে ম্যাচ শেষে দোরিয়া বলেছিলেন, ‘আমি জানি, ভক্ত-সমর্থকদের থেকে মেসিকে দূরে রাখতে মেসির দেহরক্ষী সেখানে হাজির হয়ে যান। কিন্তু ফুটবলারদের মাঝে তাঁর ঢোকার কোনো অনুমতি থাকা উচিত নয়।’ কেন এই চেউকোকে অনেকে সমীহ করেন? তাঁর পরিচয়ই-বা কী। আর্জেন্টিনার লা নেসিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পোস্টে একসময় প্রকাশিত সংবাদে জানা গিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে কাজ করেছিলেন চেউকো। মেসির এই দেহরক্ষী ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধও করেছিলেন। পরে এই প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইলে ২০২৩ সালে প্রকাশিত সংবাদে জানা গিয়েছিল, নৌবাহিনীতে তিনি কাজ করেননি। নৌবাহিনীর এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেছিলেন, চেউকোর সামরিক বাহিনীতে কাজের কোনো রেকর্ড নেই।
সামরিক বাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকলেও চেউকো যে মার্শাল আর্ট অনুশীলন করেন, সেটা জানা গেছে। ইনস্টাগ্রামে প্রায়ই তিনি পোস্ট দেন। সেই ছবিতে জিমে অনুশীলন করতে দেখা যায় তাঁকে। ইন্দোনেশিয়ার বালি ও থাইল্যান্ডে মার্শাল আর্টে অংশ নিয়েছেন। এ বছরের মার্চে বিখ্যাত রেসলার লোগান পলকে ইনস্টাগ্রামে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন চেউকো। মূলত একটি বক্সিং ম্যাচ খেলতে চেয়েছিলেন মেসির দেহরক্ষী। এক ভিডিওতে চেউকো বলেছিলেন, ‘আমি জানি, তুমি ইউটিউব দেখে বড় হয়েছ। আমি রাস্তায় বড় হয়েছি। রাস্তার লোকেরা এত কথা বলে না। তাই কথা বলা বন্ধ করে রিংয়ে আসো।’
২০২১ সালে বার্সেলোনা থেকে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) গিয়েছিলেন মেসি। পিএসজিতেও চেউকো মেসির দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেছিলেন। সেটা তখন এতটা নজরে আসেনি। ২০২৩ সালে মেসি পিএসজি থেকে ইন্টার মায়ামিতে আসতেই চেউকোকে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত। মেসি সবশেষ মাঠে নেমেছেন ৩ আগস্ট। লিগস কাপে নেকাক্সার বিপক্ষে সেই ম্যাচে মাংসপেশির চোটে পড়েন। পরে লিগস কাপে পুমাস উনাম ও মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) অরলান্ডো সিটি—এই দুই ম্যাচ মিস করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। পরশু রদ্রিগো দি পলসহ সতীর্থদের সঙ্গে মেসিকে অনুশীলনে দেখা গেছে। ইন্টার মায়ামির পরের ম্যাচ রোববার এলএ গ্যালাক্সির বিপক্ষে। চেজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় শুরু হবে এমএলএসের মায়ামি-এলএ গ্যালাক্সি ম্যাচ।
ক্রাইম জোন ২৪