শিরোনাম
হাইকোর্টে প্রবেশের সময় যুবকের ব্যাগে মিলল গাঁজা, মদ ও ইয়াবাজামায়াতের আয় সবচেয়ে বেশি, এরপর বিএনপি-জাপানাইক্ষ্যংছড়ি স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতির চিকিৎসা শুরুবিআইটির আদলে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আমরণ অনশনে চার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরাযুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকচুরির আশঙ্কায় রাত জেগে গ্রামবাসীর পাহারা, থানায় গিয়ে বিক্ষোভআনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ, তালাচাকসুর নতুন গঠনতন্ত্রে নারীবিদ্বেষ স্পষ্ট: ছাত্রদলচলনবিল রক্ষায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থানান্তরের দাবিঋণ দেওয়ার দিন জমা টাকা নিয়ে লাপাত্তা ভুয়া এনজিও

দেশ গঠনে ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা চায় বাংলাদেশ, মালয়েশিয়ার প্রতিশ্রুতি

দেশ গঠনে ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা চায় বাংলাদেশ, মালয়েশিয়ার প্রতিশ্রুতি

তুন করে দেশ গঠনের কার্যক্রমে বাংলাদেশকে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মালয়েশিয়া। পাশাপাশি মিয়ানমারে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশের প্রতি সমর্থন জোরদার করার ঘোষণাও দিয়েছে মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বারনামা ও সংবাদমাধ্যম ডেইলি সানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশের প্রতি মালয়েশিয়ার গভীর সম্মান এবং সহযোগিতার প্রতিফলন হিসেবে এসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ওপর শরণার্থী সংকটের অতিরিক্ত চাপ থাকা সত্ত্বেও মালয়েশিয়া এবং আঞ্চলিক অংশীদাররা এই সমস্যা সমাধানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

আনোয়ার ইব্রাহিম আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরের সময় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শরণার্থী এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্তদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদান আমাদের অতি জরুরি দায়িত্ব। পাশাপাশি মিয়ানমার সংকটের স্থায়ী সমাধান আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।’

আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের প্রতিনিধিদের একটি দল অচিরেই মিয়ানমারে পাঠানো হবে, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হয়রানি বন্ধ করা যায়।’ তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের তরফ থেকে বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে নেওয়া একাধিক উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ নিউইয়র্ক, কাতার ও মালয়েশিয়ায় এ সংকট নিয়ে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছি এবং আগামী ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশেষ করে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। মালয়েশিয়া আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু।’

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়া আমাদের সমর্থনে সব সময় এগিয়ে এসেছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যার সমাধানে মালয়েশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আসিয়ান চেয়ারম্যান হিসেবে মালয়েশিয়ার এই ভূমিকা প্রশংসনীয় এবং আমরা এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশা করি।’

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির বহুমুখী সম্পর্কের কথাও তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশি শ্রমিকেরা মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। এ জন্য মালয়েশিয়া তাদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার ব্যবস্থা করেছে, যাতে তারা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপদে থাকতে পারেন।’

দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি, টেলিকম, হালাল শিল্প এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত খাতে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। পেট্রোনাস, অজিয়াটা গ্রুপ এবং অন্যান্য কোম্পানিগুলো এই খাতগুলোতে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতে নতুন বিনিয়োগ ও প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

আনোয়ার ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ৫ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৩ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন রিঙ্গিত (প্রায় ২ দশমিক ৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) হয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি মূলত বস্ত্র ও পাদুকা, আর মালয়েশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্য ও পাম তেল আমদানি করা হয়।’

ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে দুই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুদৃঢ় সহযোগিতা করে আসছে। আমরা চাই এই সম্পর্ক আরও গভীর হোক এবং দুই দেশের জনগণের জন্য উপকার বয়ে আনুক।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার দেশ। এখানে বাণিজ্য, উৎপাদন, প্রযুক্তি ও শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক সুযোগ রয়েছে।’ তিনি মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ‘ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক সহযোগিতামূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে দুই দেশের উন্নয়ন ও শান্তি নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মালয়েশিয়ার সক্রিয় ভূমিকা এবং বাংলাদেশের স্থিতিশীলতায় মালয়েশিয়ার অবদান নিয়ে দুই নেতা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, যা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে শান্তি ও মানবিকতার বার্তা পৌঁছাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button