গাজায় চলমাল ইসরায়েলি গণহত্যায় নিহত বেড়ে ৬১৪৩০ জনে, অনাহারে মরল ২১৭


গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা গণহত্যামূলক হামলায় নিহতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৬১ হাজার ৪৩০–এর ঘর। এর মধ্যে অন্তত ২১৭ জন অনাহার ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের শতজনই শিশু। ক্রমবর্ধমান এই মৃত্যুমিছিলের সঙ্গে মানবিক সংকটও পৌঁছেছে চূড়ান্ত পর্যায়ে।
রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ জনের মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৩৬৩ জন। এতে ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ জনে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় পড়ে আছেন। উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না। এর ফলে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩০৪ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৭৭৮ জনে, আর আহত হয়েছেন অন্তত ১২ হাজার ৮৯৪ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে আরও পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ নিয়ে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৭ জনে। এর মধ্যে শতজনই শিশু।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজায় মানবিক সংকট প্রতিদিনই আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র ঘাটতির কারণে প্রাণহানি বাড়ছে।
গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি সেনারা আবারও গাজায় হামলা শুরু করে। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৯২১ জন নিহত এবং ৪১ হাজার ১৭২ জন আহত হয়েছেন। এর মাধ্যমে জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভঙ্গ করা হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগের মামলাও চলছে।
ক্রাইম জোন ২৪