[ad_1]
আন্দোলনে যুক্ত হতে কোন বিষয়টি আপনাকে প্রভাবিত করেছিল?
আমরা সারা বছর কঠোর পরিশ্রম করে পড়ালেখা করি, শুধু একটি স্থিতিশীল চাকরির আশায়। কিন্তু যখন সেই চাকরির ক্ষেত্রেও বৈষম্যের মুখোমুখি হতে হয়, তখন ভেতরে একধরনের অসহায়ত্ব ও ক্ষোভ জন্ম নেয়। জুনের মাঝামাঝি শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত হয়, ৩০ জুনের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১ জুলাই থেকে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে। বাস্তবে তা-ই হয়।
১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে ছোট পরিসরে আলোচনা ও মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির শুরু হয়। এই আন্দোলনে আমাদের সম্পৃক্ততার মূল কারণ ছিল চাকরির অধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করে আন্দোলনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে থাকা অবস্থায় আন্দোলনে অংশ নেওয়া সহজ ছিল না। ছাত্রলীগ তখন হলে একধরনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে রেখেছিল। আন্দোলনে যখনই সময়সূচি ঘোষণা হতো, ঠিক তখনই তারা দলীয় প্রোগ্রামের নামে শিক্ষার্থীদের আটকে রাখত। অনেক সময় আমাকে মিথ্যা বলতে হতো। আমি হলে নেই বা ঢাকায় আসিনি। আবার বাধ্য হয়ে প্রোগ্রামে গেলে মাঝপথে সেখান থেকে পালিয়ে কোটা আন্দোলনে যোগ দিতাম।
আন্দোলনে আপনার ভূমিকা কী ছিল?
১১ জুলাই থেকে আন্দোলনের পরিস্থিতি অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। সেদিন ‘বাংলা ব্লকেড’ বাস্তবায়নে আমি মিন্টো রোডে একাই নেতৃত্ব দিই। রমনা বিভাগের ডিসি বারবার হুমকি দিয়ে ব্লকেড তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। আন্দোলনের পর হলে ফিরে দেখি, পরিবেশ থমথমে। ১৬ জুলাই রাতে সহিংসতা চরমে পৌঁছায়। সেদিন আবু সাঈদসহ ৬ শিক্ষার্থী শহীদ হন। ওই রাতে নিরাপত্তার কারণে অন্য হলে আশ্রয় নিই।
সরকারের দমনপীড়নের মুখে কখনো কি মনে হয়েছে, নিজের জীবন বা ক্যারিয়ার হুমকিতে?
১৬ জুলাই আবু সাঈদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর আমার ভয়ভীতি পুরোপুরি দূর হয়ে যায়। আমাদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে তখন যুক্ত হয় আবু সাঈদ ভাইয়ের জন্য সুবিচার। যদি আন্দোলন সফল না হতো, হয়তো সেখানেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটত, আমরা রয়ে যেতাম আয়নাঘরে বন্দী।
শেষের দিকে সরকারের তীব্র দমনপীড়ন কীভাবে প্রতিরোধ করেছিলেন?
তখন আসলে আমরা যারা আন্দোলনের সম্মুখসারিতে ছিলাম, তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছিলাম। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জেলায় গিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। আমি তখন কীভাবে কৌশলগতভাবে আন্দোলন চালিয়ে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে ভূমিকা রাখছিলাম। ওই মুহূর্তে আমরা রেমিট্যান্স শাটডাউনের ডাক দিয়ে আন্দোলনে প্রবাসীদের যুক্ত করি। এই পদক্ষেপ আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। তখন থেকে আমরা আর কোনোভাবেই আপসে না যাওয়ার জন্য মনস্থির করি।
৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?
গত ১৭ বছরে দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতির প্রকট ছাপ ছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে দেশের বাইরে। কিন্তু এখন আমি একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। একটি এমন দেশ, যেখানে পরিবারতন্ত্র ও একক আধিপত্যের অবসান ঘটবে। একজন চাষা, পানচাষি বা লবণচাষির ছেলেও যেন একটা নতুন দেশের স্বপ্ন দেখতে পারে, সে স্বপ্ন আমি দেখি। কোনো খাতে থাকবে না দালাল আর দুর্নীতির আধিপত্য।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]