[ad_1]
লাইসেন্স ও অনুমোদন না নিয়েই মেট্রোরেল লাইন-৬ (এমআরটি-৬)-এর মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশ সম্প্রসারণ চলছে। অথচ আইনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) থেকে লাইসেন্স নিয়ে নির্মাণকাজ শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উল্টো ডিটিসিএ কয়েক দফা চিঠি দিলেও এখনো অনুমোদন নেয়নি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাইসেন্স না নিয়ে কাজ করলে প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। অর্থায়নকারী সংস্থার মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে।
অবশ্য ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বলেছে, তারা এমআরটি-৬-এর জন্য লাইসেন্স নিয়েছে। সেখানে লাইনের সীমা বলা নেই। এরপরও কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশের জন্য আলাদা লাইসেন্স নিতে হলে হাতে সময় থাকায় তা নেওয়া হবে।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি-৬। এটি পরিচালনাকারী সংস্থা ডিএমটিসিএল। ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর প্রথম ধাপে উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এবং ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশে মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হয়। পরে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ শুরু হয়। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের জন্য ২০১৯ সালের ৩ জুন লাইসেন্স নেয় ডিএমটিসিএল। সেখানে কমলাপুর অংশের উল্লেখ নেই।
২০১৫ সালের মেট্রোরেল আইন এবং ২০১৬ সালের মেট্রোরেল বিধিমালা অনুযায়ী, মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের সব ধরনের কারিগরি কাজের ক্ষেত্রে সংস্থাটিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ডিটিসিএ থেকে লিখিত অনুমোদন নিতে হবে। আইনের ১৫(১) ধারা ও বিধিমালার ২৪ নম্বর বিধি অনুযায়ী, অবকাঠামো নির্মাণ, সম্প্রসারণ বা রুট পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
তবে এমআরটি-৬-এর মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত রুট সম্প্রসারণের জন্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ডিটিসিএ থেকে কোনো অনুমোদন নেয়নি ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএ সূত্র বলছে, মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত লাইসেন্স থাকলেও কমলাপুর পর্যন্ত লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত পুরো রুটের নির্মাণকাজের অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
ডিটিসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, অনুমোদন না নিয়ে সম্প্রসারণকাজ শুধু আইনের লঙ্ঘনই নয়, ভবিষ্যতে প্রকল্পের স্বচ্ছতা, মান এবং জননিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় প্রশ্ন তুলতে পারে। এমআরটি লাইন-৬-এর রুট অ্যালাইনমেন্ট কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিতকরণ এবং নির্মাণ পরিকল্পনা অনুমোদন না নেওয়ায় ৩ জুলাই ডিটিসিএ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানায়।
ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার বলেন, মেট্রোরেলের পরবর্তী লাইনগুলোতে যেন সময়মতো লাইসেন্স নেওয়া হয়, সে বিষয়ে তাঁরা আগে থেকে তৎপরতা চালাবেন। লাইন-৬-এর বর্ধিত অংশের জন্য নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স নিতে ডিএমটিসিএলকে জানানো হবে।
জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-৬) প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়া বলেন, ‘উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন-৬ একটি অ্যালাইনমেন্ট। আমরা লাইন-৬-এর জন্য লাইসেন্স নিয়েছি, কিন্তু সেটিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি, এটি আগারগাঁও বা মতিঝিল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তবে কমলাপুর পর্যন্ত ট্রেন চালু করতে আরও দুই বছর সময় লাগবে। যদি আইন অনুসারে কমলাপুর অংশের জন্য আলাদা লাইসেন্স নিতে হয়, সময় হাতে থাকায় ডিএমটিসিএল তা অবশ্যই নেবে।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনের ৯০ শতাংশ মানা যাবে, বাকি ১০ শতাংশ নয়—এমন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণযোগ্য নয়। আইন মেনে চলাই সুশাসনের অন্যতম ভিত্তি, আর এই সুশাসনকে আরও বিস্তৃত করতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইন ও প্রক্রিয়াগুলো সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় উন্নয়ন হবে খণ্ডিত ও বিচ্ছিন্ন।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]