[ad_1]
চিনি স্বাদে মিষ্টি হওয়ায় অনেকের প্রিয়। এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। তবে অতিরিক্ত চিনি খাওয়া ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ ও দাঁতের সমস্যার মতো নানান রোগ তৈরি করতে পারে। তাই চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, সব ধরনের চিনি শরীরের জন্য সমান ক্ষতিকর নয়।
চিনিকে প্রধানত দুই ভাগ করা যায়—প্রাকৃতিক চিনি ও কৃত্রিমভাবে তৈরি চিনি। ফলসহ বিভিন্ন খাবারে যে চিনি স্বাভাবিকভাবে থাকে, তা প্রাকৃতিক চিনি। যেমন ফলে ফ্রুকটোজ ও দুধে ল্যাকটোজ নামে প্রাকৃতিক চিনি থাকে। এই চিনিগুলো সাধারণত ক্ষতিকর নয়। এর সঙ্গে অন্যান্য উপকারী উপাদান; যেমন আঁশ, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন থাকে। অন্যদিকে, খাবারে আলাদা যোগ করা চিনি খাবার প্রক্রিয়াজাতের সময় আলাদাভাবে যোগ করা হয়। কোমল পানীয়, মিষ্টি, বিস্কুট, সিরিয়াল, ফ্লেভারড দই ইত্যাদিতে এই ধরনের চিনি থাকে।
প্রতিদিন কতটুকু চিনি নিরাপদ
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের (এএইচএ) মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন প্রতিদিন গড়ে ১৭ চা-চামচ বা ৭১ গ্রাম অতিরিক্ত চিনি খেয়ে থাকেন। এটি প্রস্তাবিত মাত্রার চেয়ে ৩ গুণ বেশি! অথচ প্রতিদিন পুরুষদের ৯ চা-চামচ আর নারীদের ৬ চা-চামচ চিনি খাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে এএইচএ। শিশুদের জন্য এই সীমা আরও কম, মাত্র ২৫ গ্রাম বা ৬ চা-চামচ। দুই বছরের নিচের শিশুদের চিনি যোগ করে না খাওয়াতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিদিন পুরুষদের ৯ চা-চামচ, নারী ও শিশুদের ৬ চা-চামচ বা ২৫ গ্রাম করে চিনি খাওয়া নিরাপদ। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের (এএইচএ)
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশের বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ, কেউ যদি দিনে ২ হাজার ক্যালরি গ্রহণ করে, তাহলে তার সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম চিনি যথেষ্ট। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন আরও কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে।
প্রাকৃতিক বনাম কৃত্রিমভাবে তৈরি চিনি
শরীর সাধারণভাবে সব ধরনের চিনিই হজম করে। তবে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
⦁ প্রাকৃতিক চিনিযুক্ত খাবার; যেমন ফল, সবজি, শস্য ও বাদামে আঁশসহ জটিল শর্করা থাকে। এগুলো ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি রোধ করে।
⦁ কৃত্রিমভাবে তৈরি চিনি, যা সাধারণত খাবারে যোগ করা হয়, সেগুলোতে সাধারণত সরল শর্করা থাকে। এ ধরনের চিনি দ্রুত হজম হয় এবং অতিরিক্ত খেলে শরীরের ওজন বাড়ে।
অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার স্বাস্থ্যঝুঁকি
ওজন বৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি রোগ: অতিরিক্ত ক্যালরির মতো অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে ওজন বাড়ে। এই বাড়তি ওজন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, ঘুমের সমস্যা, হাঁটুব্যথা, ক্যানসার ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়ায়।
দাঁতের ক্ষয়: অতিরিক্ত চিনি, বিশেষ করে খাবারে যোগ করা চিনি, সব বয়সী মানুষের দাঁতের ক্ষয়ের প্রধান কারণ। তবে ফল বা দুধের মতো প্রাকৃতিক চিনিযুক্ত খাবারে আঁশ, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি থাকায় দাঁতের ওপর সেই রকম ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না।
হৃদ্রোগ: কিছু গবেষণা বলছে, যোগ করা চিনি, বিশেষ করে চিনিযুক্ত পানীয় হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ডায়াবেটিস: অনেকে মনে করেন, চিনি খাওয়া মানেই ডায়াবেটিস হওয়ার সমূহ আশঙ্কা। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, কেবল খাবারে বাইরে থেকে যোগ করা চিনি ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ নয়; বরং বয়স, স্থূলতা, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং পারিবারিক ইতিহাস ডায়াবেটিসের বড় কারণ। তবে চিনিযুক্ত পানীয় সীমিত করা উচিত।
ফ্যাটি লিভার: চিনিযুক্ত পানীয়তে থাকা ফ্রুকটোজ অতিরিক্ত খেলে লিভারে চর্বি জমার ঝুঁকি থাকে। তবে এখানেও চিনি সরাসরি ফ্যাটি লিভারের কারণ নয়; বরং একাধিক কারণের সম্মিলিত প্রভাব থাকতে পারে এ রোগে।
যেসব খাবারে বেশি চিনি থাকে
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫০ শতাংশ যোগ করা চিনি আসে পানীয় থেকে। কোল্ড ড্রিংকস, ফলের জুস, চিনি দেওয়া চা-কফি ইত্যাদি ছাড়াও মিষ্টি স্ন্যাকস, চকলেট, ডেজার্ট, স্যান্ডউইচ, সিরিয়াল, গ্রানোলা বার, ফ্লেভারড দই—এসবে চিনি যোগ করা হয়।
খাবারে চিনি কমানোর সহজ উপায়
প্রতিদিন কতটুকু চিনি খাওয়া উচিত, তা নির্ভর করে ক্যালরি গ্রহণের ওপর। তবে প্রাকৃতিক চিনির চেয়ে যেকোনো খাবারে যোগ করা চিনির ওপর নজর দেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: হেলথ জার্নাল
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]