[ad_1]
কম্বোডিয়া ‘অবিলম্বে’ যুদ্ধবিরতির জন্য থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। চলমান সীমান্ত সংঘর্ষে দুই দেশের ৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে অধিকাংশ বেসামরিক নাগরিক।
জাতিসংঘে কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত চিয়া কেও বলেছেন, তাঁর দেশ ‘শর্তহীনভাবে’ যুদ্ধবিরতি চেয়েছে। নমপেন এই বিরোধের একটি ‘শান্তিপূর্ণ সমাধান’ চায়।
থাইল্যান্ড এই প্রস্তাব নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যান করেছে। এর আগে তারা কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী আটটি জেলায় সামরিক আইন জারি করেছিল।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই দেশে অন্তত ৩২ জন—সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক—নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার প্রথম কে গুলি ছুড়েছে এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আসছে দুই দেশ।
আজ শনিবার থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, কম্বোডিয়া দক্ষিণের উপকূলের কাছে একটি নতুন এলাকায় হামলা চালিয়েছে। তবে নৌবাহিনী সেসব হামলা প্রতিহত করেছে। এর আগে, থাইল্যান্ড জানিয়েছে, দেশটির সুরিন, উবন রাতচাতানি এবং সিসাকেত প্রদেশে কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় যুদ্ধ চলছে।
ব্যাংককের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশটিতে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ছয়জন সৈনিক। থাই কর্মকর্তারা আরও জানান, প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে। এর মধ্যে আটজন বেসামরিক নাগরিক এবং পাঁচজন সৈনিক। তারা জানিয়েছে, ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ভূমিথাম ভেচায়াচাই গতকাল শুক্রবার সতর্ক করে বলেছেন, এই সংঘর্ষ ‘যুদ্ধের দিকে মোড় নিতে পারে’। তিনি বলেন, যুদ্ধে এখন ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে হচ্ছে। সীমান্তের ১২টি স্থানে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
কম্বোডিয়া বেসামরিক এলাকায় গুলি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়ার রকেটের আওতার মধ্যে থাকা সমস্ত গ্রাম খালি করেছে থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়াও থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ করেছে। ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র বিশ্বের অনেক দেশে নিষিদ্ধ। কারণ, এতে বেসামরিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়। থাইল্যান্ড এই অভিযোগের কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে, থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এই সংঘাতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার ‘কোনো প্রয়োজন নেই’। বিশ্ব নেতারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর পর তিনি এই অবস্থান ব্যক্ত করেন।
দক্ষিণ পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট (আসিয়ান)-এর চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, এর আগে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ‘শত্রুতার অবসান, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান’-এর আহ্বান জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড বলছে, কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনী সীমান্তের কাছে থাই সেনাদের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য ড্রোন মোতায়েন করার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়। কম্বোডিয়া বলছে, থাই সৈন্যরা পূর্ববর্তী চুক্তি লঙ্ঘন করে সীমান্তের কাছে একটি খেমার-হিন্দু মন্দিরের দিকে অগ্রসর হওয়ার পর সংঘাত শুরু করে।
দুই দেশের মধ্যে এই বিরোধ ১০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। কম্বোডিয়ায় ফরাসি উপনিবেশ সমাপ্তির পর দুই দেশের সীমান্তরেখা আঁকা হয়েছিল। সীমানা বিরোধ নিয়ে গত কয়েক বছরে বহুবার বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের সৈনিক ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গত মে মাসে একটি সংঘর্ষে কম্বোডিয়ার এক সৈনিক নিহত হওয়ার পর উত্তেজনা বেড়ে যায়।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]