[ad_1]
যশোরের মনিরামপুরে সরকারি অর্থ বরাদ্দের টাকায় মুক্তেশ্বরী নদী খুঁড়ে বালু তুলে মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজের মাঠ ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্নার তত্ত্বাবধানেই চলছে এ কাজ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনও বলেছেন, নদী থেকে নয়, বালু কিনে এনে মাঠ ভরাট করা হচ্ছে।
স্থানীয় ও কলেজ সূত্র বলেছে, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি মনিরামপুরের ইউএনও নিশাত তামান্না। তাঁর কাজ নদী খুঁড়ে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ করা এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। অথচ তিনি নিজেই বালু তোলার কাজ পরিদর্শন করে গেছেন। শুধু তা-ই নয়, বরাদ্দের টাকায় কাজ শেষ করতে না পারায় কলেজের তহবিল থেকে বাড়তি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও নিশাত তামান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, বালু কিনে এনে কলেজের মাঠ ভরাটের কাজ করা হচ্ছে। মুক্তেশ্বরী নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে না। কারণ নদী থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভবদহ অঞ্চলভুক্ত হওয়ায় মনিরামপুর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ মাঠে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মাঠ ডুবে শ্রেণিকক্ষে পানি উঠে যায়। এতে বাধাগ্রস্ত হয় পাঠদান। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের আওতায় মুক্তেশ্বরী কলেজ মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর। সেই টাকা দিয়ে মাটি না কিনে মুক্তেশ্বরী নদী খনন করে বালু তুলে কলেজের মাঠে ফেলা হয়েছে। বরাদ্দের টাকায় ঘাটতি পড়ায় কলেজের তহবিল থেকে আরও ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইউএনও।
গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিন পাঁচবাড়িয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মুক্তেশ্বরী কলেজের অদূরে উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মুক্তেশ্বরী নদী। কলেজ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে পাঁচবাড়িয়া শ্মশানঘাটে মুক্তেশ্বরী নদীতে খননযন্ত্র বসানো হয়েছে। সেখান থেকে পাকা রাস্তার পাশ দিয়ে পাইপ টেনে মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়ক টপকে ফেলা হয়েছে মুক্তেশ্বরী কলেজ মাঠে। তবে এ সময় বালু উত্তোলন চক্রের কাউকে পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুক্তেশ্বরী নদীর বালু এনে মাঠের কোথাও ২ ফুট, আবার কোথাও ৫ ফুট উঁচু করা হয়েছে। মাঠের ২৬ হাজার ৪০০ বর্গফুট জায়গায় প্রায় ৬৬ হাজার বর্গফুট বালু ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাঁচবাড়িয়া এলাকার এক ব্যক্তি ঘের কেটে কলেজ মাঠে মাটি দিতে চেয়েছেন। ঘের কাটার শর্তে কলেজের পক্ষ থেকে জমির মালিক কোনো টাকা চাননি। শুধু মাটি কাটা খরচের বিনিময়ে তিনি মাটি দিতে চেয়েছিলেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়নি।
জানতে চাইলে মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেন মণ্ডল বলেন, ‘ইউএনও আমাদের সভাপতি। মাঠ ভরাটের জন্য সরকারিভাবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেই টাকা দিয়ে বালু তোলার যন্ত্র ও লোক ভাড়া করে এনে মুক্তেশ্বরী নদী থেকে বালু তুলে মাঠ ভরাটের কাজ করছি। ওই টাকায় কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় পরে ইউএনও কলেজ ফান্ড থেকে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, মাঠে স্তরভেদে ২ ফুট থেকে ৫ ফুট বালু ফেলা হয়েছে। কলেজ থেকে অন্তত ১ কিলোমিটার দূরে নদীতে যন্ত্র বসিয়ে বালু তোলায় খরচ একটু বেশি হয়েছে। প্রতি ফুট বালুর জন্য সাড়ে ৭ টাকা খরচ দিতে হয়েছে। সভাপতি হিসেবে ইউএনও বিষয়টি তদারকি করছেন।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]