শিরোনাম
বড়াইগ্রামে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহতরাজনীতিতে নারী ও তরুণদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নপুলিশ হত্যার দায় ছাত্র-জনতার ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে: নাহিদ ইসলামমাথায় হাত বুলিয়ে, ধমক দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে: সালেহউদ্দিন আহমেদ‘নিম্ন ও উচ্চ আদালতের বিচারকদের সম্পর্ক দাস-প্রভুর মতো’, ভারতীয় বিচারপতির ক্ষোভচ্যাটজিপিটিকে ব্যক্তিগত পরামর্শক বানাবেন না, সতর্ক করলেন অল্টম্যানবিদেশ থেকে মানুষ ভাড়া করে এনে দেশ চালানো যায় না: মির্জা ফখরুলআগে ঘুষ দিতে হতো ১ লাখ, এখন দিতে হয় ৫ লাখ: মির্জা ফখরুলআমরা রাতের বেলায় কিছু করতে চাই না: সিইসিপ্রেমিকাকে ডেকে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ৩

মির্জাপুরে টনসিল অস্ত্রোপচারের পর শিশুর মৃত্যু, কর্তৃপক্ষের গা ঢাকা

মির্জাপুরে টনসিল অস্ত্রোপচারের পর শিশুর মৃত্যু, কর্তৃপক্ষের গা ঢাকা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে টনসিলের অস্ত্রোপচারের পর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির মৃত্যু হলে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্তৃপক্ষ গা ঢাকা দেন।

মারা যাওয়া শিশু তাসরিফা আক্তার (৯) দেলদুয়ার উপজেলার পাচুটিয়া গ্রামের পারভেজ মিয়ার মেয়ে।

পারভেজ মিয়া জানান, তিনি ঢাকার রপ্তানি এলাকার একটি কারখানায় মেকানিক পদে চাকরি করেন। শুক্রবার সকালে স্ত্রী পলি আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে মেয়ে তাসরিফার টনসিলের চিকিৎসা করাতে মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাসরিফার টনসিলের অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি করেন। দুপুর পৌনে দুইটার দিকে তাকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। নাক-কান-গলা রোগের চিকিৎসক ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ অস্ত্রোপচার করেন। সোয়া দুইটার দিকে অস্ত্রোপচার শেষে তাকে অচেতন অবস্থায় শয্যায় নেওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক জানান, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।

কিছুক্ষণ পর তাসরিফা হাত-পা ছুঁড়ে ছটফট করতে থাকে। পারভেজ আহমেদ নার্স ও চিকিৎসকদের ডাকেন। একজন নার্স এসে বলেন, টনসিল অপারেশনের রোগী হাত-পা ছটফট করে থাকে। এরপরই তাসরিফার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে এবং সে নিথর হয়ে যায়। পরে চিকিৎসক এসে তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠান। কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসক জানান, তাসরিফা মারা গেছে।

পরে মৃত শিশু নিয়ে ক্লিনিকে ফিরে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ তুলে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন বাবা পারভেজ আহমেদ ও মা পলি বেগম। তখন অস্ত্রোপচারের চিকিৎসক ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ, নার্সসহ মালিকপক্ষ ক্লিনিক ছেড়ে চলে যান।

শিশুর বাবা পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের কিছুক্ষণ পর আমার মেয়ে ছটফট করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর দেখি, ও নিথর হয়ে গেছে। এরপর ওরা কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে জানানো হয়, তাসরিফা মারা গেছে। ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।’

শিশুটির মা পলি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের কোনো সমস্যা ছিল না। ওরা আমার তরতাজা মেয়েকে মেরে ফেলেছে।’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে কি না, জানতে চাইলে অস্ত্রোপচারের চিকিৎসক ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ মুঠোফোনে বলেন, ‘অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এনেস্থেসিয়ার কারণে মৃত্যু হতে পারে।’ তবে এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফ আবদুল্লাহ বলেন, ‘এনেস্থেসিয়ায় ভুল হলে রোগীর জ্ঞান ফেরে না। কিন্তু অপারেশনের পর রোগীর জ্ঞান ফিরেছিল, এমনকি কথা বলতেও পেরেছে।’

এদিকে, টনসিল অপারেশনে শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ টাকা দিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করছে—এমন অভিযোগও উঠেছে। ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হালিম বলেন, ‘শিশুর বাবার সঙ্গে আপস-রফার চেষ্টা চলছে।’

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button