লাশবাহী গাড়িতে মেয়ের নিথর দেহ, ‘ও সোনা রে’ বলে চিৎকার করে কাঁদছেন মা


লাশবাহী গাড়িতে মেয়ের নিথর দেহ, ‘ও সোনা রে’ বলে চিৎকার করে কাঁদছেন মা
মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৩৭
লাশবাহী গাড়িতে মেয়ে তাসনিম মায়া নিথর দেহ। মা আফরোজা খাতুন বিথিকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না কেউ। আজ শুক্রবার ভোররাতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘ও সোনা, সোনা রে’ বলে চিৎকার করে লাশবাহী গাড়ির সামনে কাঁদছেন মা আফরোজা খাতুন বিথি। কেউই তাঁকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না। গাড়িতে ছিল মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে প্রাণ হারানো মেয়ে তাসনিম মায়ার নিথর দেহ। মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর গ্রামে আজ শুক্রবার ভোররাতে লাশবাহী গাড়িটি পৌঁছালে এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়।
আজ সকাল সাড়ে ৮টায় জয়পুর কবরস্থানে মায়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখানেই তার দাফন হয়।
মামা তারেক হোসেন জানান, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল তাঁর ভাগনি তাসনিম মায়া। গত সোমবার স্কুলের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন মা আফরোজা খাতুন। বিমান বিধ্বস্তে পর মেয়েকে খুঁজতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন ধরে তার এক বান্ধবী। সে জানায়, মায়া অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। অবশেষে স্কুলের সামনে স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে মায়াকে খুঁজে পান তাঁরা। দ্রুত তাকে নিয়ে যান ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে।
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন ধরে মায়া আইসিউতে ছিল। চিকিৎসকেরা প্রথমে জানান, মায়ার শরীরের ৬৫ ভাগ পুড়ে গেছে। এক দিন পর আবার তার শরীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতির কথা শুনে তাঁরা আশায় ছিলেন মায়া হয়তো প্রাণে বেঁচে যাবে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মায়ার অবস্থার অবনতি ঘটে। চিকিৎসকেরা বললেন, তাঁর শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। জরুরিভাবে রক্তের প্লাটিলেট দেওয়া লাগবে। প্লাটিলেটের ব্যবস্থা করা হয় বেলা ৩টার মধ্যে। কিন্তু সেই প্লাটিলেট আর মায়ার শরীর নিতে পারছিল না। অবশেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মায়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
তারেক হোসেন জানান, পাঁচ বছর আগে মায়ার বাবা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস মারা গেছেন। তার আরেকটি পাঁচ বছর বয়সী ছোট বোন আছে। দুই মেয়েকে নিয়ে উত্তরায় বাস করতেন আফরোজা খাতুন।