[ad_1]
গভীর রাতে মাস্ক ও হেলমেট পরে ছদ্মবেশী মিছিল। মুখে ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ ‘জামায়াত-শিবিরের চামড়া, খুলে নেব আমরা’, ‘বিএনপির চামড়া, খুলে নেব আমরা’, স্লোগান। ভিডিও দেখে যে কারও মনে হতে পারে আওয়ামী লীগের মিছিল। তবে মিছিলে ছিলেন জামায়াত নেতা সোলায়মান হোসেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুজাহিদ বিন ফিরোজ, সমন্বয়ক ইমরান হোসেন, মীর আরিফ তারা ও তাঁদের অনুসারীরা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মিছিলের একটি ভিডিও রাতে ছড়িয়ে দেন মুজাহিদ। ভিডিওতে আওয়ামী লীগের নামে হুমকিমূলক বার্তা দেন তিনি। মুহূর্তে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঘটনাটি ঘটে ১৬ জুলাই সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সখীপুর ইউনিয়নের চিনেডাঙ্গা এলাকায়।
মুজাহিদ বিন ফিরোজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেবহাটা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক এবং সোলায়মান হোসেন সখীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের রোকন সদস্য।
৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে মুখোশধারীদের পোশাক ও চালচলন দেখে সন্দেহের দানা বাঁধে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের। মিছিলকারীদের শনাক্তের পর তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তাঁরা।
এর মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেবহাটা উপজেলা শাখার আহ্বায়কের পদ থেকে মুজাহিদ বিন ফিরোজকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটির সাতক্ষীরা জেলা কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক আরাফাত হোসাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুজাহিদ বিন ফিরোজ সংগঠনের নীতিমালা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। একজন পদধারী নেতার এমন আচরণ সংগঠনের ভাবমূর্তি ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার পরিপন্থী এবং এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই প্রেক্ষাপটে জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে আহ্বায়ক পদসহ সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক মো. আরাফাত হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দায়িত্বশীল পদে থেকেও তিনি একাধিকবার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। আগেও তাঁকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো পরিবর্তন না আসায় সংগঠনের স্বার্থে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’
অপর দিকে উপজেলা জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, সোলায়মান হোসেন ও মিছিলে অংশ নেওয়া অন্য কর্মীদের নামের তালিকা তৈরি করে সাংগঠনিক সুপারিশসহ জেলা জামায়াতের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত কয়েক দিন জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নামে ভুয়া ফেসবুক থেকে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মো. অলিউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওই মিছিলে থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রোকন সদস্য সোলায়মানসহ বেশ কয়েকজনের অংশগ্রহণের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। দলীয় নিয়মনীতি অনুযায়ী বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া হাসান বলেন, সম্প্রতি রাতের আঁধারে হেলমেট ও মাস্ক পরে কয়েক সেকেন্ডের মিছিলটির রাজনৈতিক অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি বিষয়টি সাজানো।
গোলাম কিবরিয়া হাসান বলেন, দেবহাটার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যদি কেউ শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করে, সে যে-ই হোক তাঁকে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মুজাহিদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। কিছুদিন আগে ফেসবুকে নিজেকে জাতীয় সংসদের স্পিকার দাবি করেন। তার কয়েক দিন পর সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তার করেন তিনি। এমনকি ইউএনও ও ওসিকে বিভিন্নভাবে চাপ দেন।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলার ঘটনায় তিন সহযোগীসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকার অনলাইন পোর্টালে ‘সাতক্ষীরায় পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, সেনা জালে ৩ সমন্বয়ক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]