[ad_1]
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তির বিষয়ে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে। তবে অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা ফিরছে।
রাজধানীর বনানীতে আজ বৃহস্পতিবার পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ মান্থলি ম্যাক্রো ইকোনমিক ইনসাইট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান। এতে সভাপতিত্ব করেন পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার।
মঈন খান বলেন, এনজিও ও করপোরেট পলিসি দিয়ে সরকার চালানো যায় না। এনজিওর মতো সরকার চালালে সমস্যা তৈরি হবে। সরকার আর এনজিও আলাদা বিষয়। এনজিও জনগণের একটি অংশ নিয়ে কাজ করে। সব জনগণ নিয়ে তাদের কাজ না। আর করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কাজ মুনাফা অর্জন করা। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে সব জনগণের মতামত থাকতে হবে।
বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ে মঈন খান বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো টাকার বিপরীতে ডলারের মান অবমূল্যায়িত হতে দেখলাম। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক কেন ডলারের অবমূল্যায়ন ঠেকাচ্ছে? টাকা শক্তিশালী হলে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও বাড়বে।’ দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সংস্কার প্রসঙ্গে মঈন খান বলেন, ‘গত জুলাইয়ের দুই বছর আগে থেকেই আমরা সংস্কার নিয়ে কাজ করছি। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার বলেন, গত কয়েক মাসে প্রবৃদ্ধি স্থবির রয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন কিছুটা স্থিতিশীলতার দিকে রয়েছে। তিনি বলেন, পরিমিত আমদানির মাধ্যমে বাংলাদেশের বহিরাগত খাত মে এবং জুন মাসে শক্তিশালী হয়েছে। জুলাই-মে মাসে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঘাটতি ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে সংকুচিত হয়েছে, অন্যদিকে বাণিজ্য ঘাটতি ১৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে।
আইএমএফ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ২০২৬ সালের জন্য ৫ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছে উল্লেখ করে জাইদী সাত্তার বলেন, এটা সরকারের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা আইএমএফের আগের দেওয়া প্রক্ষেপণের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে। এটি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কঠোর আর্থিক ও রাজস্ব নীতি, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং ব্যাংকিং খাতে ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগের প্রতিফলন।
জাঈদী সাত্তার তাঁর উপস্থাপিত প্রবন্ধে জানান, দেশে দারিদ্র্য হ্রাসের দিকে, কিন্তু ঝুঁকি অব্যাহত রয়েছে। দারিদ্র্য হ্রাসে অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ দারিদ্র্যসীমার ঠিক ওপরে রয়ে গেছে এবং ধাক্কার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ১০ শতাংশ আয় হ্রাস আরও ১০ শতাংশ দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের রাজস্ব জায়গা সীমিত। করনীতি, ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং জিডিপির হিসাব প্রদানের ক্ষেত্রে সংস্কার জরুরি। যদিও তা কষ্টদায়ক হতে পারে। এনবিআরের নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নের মধ্যে স্পষ্ট পৃথক্করণ না থাকলে অর্থবহ অগ্রগতি অসম্ভব।’
পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে গৃহীত নীতি ও পদক্ষেপগুলো আগামী ১ থেকে ৩ বছর অব্যাহত রাখতে হবে। তাই নির্বাচিত নতুন সরকারকে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিনটন পোবেক বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো বোঝার এবং সেগুলোর সঙ্গে কার্যকরভাবে জড়িত হওয়ার একটি সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে হবে।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]