[ad_1]
সরকারি প্রকল্প, পরিবহন ব্যয় ও বিনিয়োগে অসামঞ্জস্য রয়েছে; রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা না বাড়ালে অর্থনীতি এখানেই আটকে থাকবে। বারবার নীতি পরিবর্তন, অপচয়ী ব্যয় আর অপরিকল্পিত উন্নয়নের দুষ্টচক্র ভাঙার একমাত্র উপায় সমন্বিত, বাস্তবমুখী কৌশল। ‘দেশের পরিবহন, সবুজ প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগ সংকট’ শীর্ষক ইআরএফ-পলিসি এক্সচেঞ্জ কর্মশালায় বক্তারা এই সতর্কবার্তা দেন।
গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফেরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন গাড়ি আমদানিকারক ও বিক্রেতাদের সংগঠন বারভিডার সভাপতি মো. আব্দুল হক, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ড. মাশরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে পণ্য সরবরাহব্যবস্থার ব্যয় পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি—২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি খরচ হচ্ছে। শুধু এই খরচ কমাতে পারলে আমাদের রপ্তানি ২০ শতাংশ বাড়তে পারে। অথচ পরিবহন ও লজিস্টিক খাত এখনো প্রযুক্তি ও গতি দুটোতেই পিছিয়ে।’
ড. মাশরুর রিয়াজ আরও বলেন, উন্নত পরিবহনব্যবস্থার জন্য শুধু নতুন গাড়ি নয়, উন্নত প্রযুক্তির পুরোনো গাড়িও টেকসই সমাধান হতে পারে। তাঁর মতে, জাপানের মতো দেশের ব্যবহার করা গাড়ি পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর সেবা দেয় অনেক বছর, যা অনেক দেশের নতুন গাড়িও পারে না।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা ছাড়া কোনো উদ্যোগ টেকসই হয় না। বিগত ১৬ বছরে এমন সব ফ্যালাসি বিনিয়োগ করা হয়েছে, যার দায় আমরা এখনো বইছি—চড়া মূল্যের মেট্রোরেল থেকে কর্ণফুলী টানেল, এগুলো ঋণে গড়া উন্নয়ন; যার অর্থনৈতিক ভার ভয়াবহ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় ব্যয়ের বাইরে গিয়ে দায় তৈরি করেছি, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় পর্যায়ে, যা টেকসই নয়।’
বারভিডার সভাপতি মো. আব্দুল হক বলেন, ‘পুরোনো গাড়ি মানে দূষণ—এই ভ্রান্ত ধারণায় কর চাপানো হয়েছে। অথচ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহৃত গাড়ি পরিবেশের জন্য নিরাপদ হতে পারে। আমাদের আমদানি নীতিতে এই বাস্তবতা প্রতিফলিত হওয়া দরকার।’
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, ‘গণপরিবহনের উন্নয়নের বিকল্প নেই। উন্নয়ন তখনই বাস্তব হবে, যখন বড় গাড়িতে চড়া লোকজন গণপরিবহনে উঠে আসবে।’ তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বারবার নীতিমালা পরিবর্তনের সমালোচনা করে বলেন, ‘নীতির স্থিতি না থাকলে ব্যবসায়ীরা বিভ্রান্ত হন। সরকার শুধু ব্যবসায়ীদের কথা শোনে, কিন্তু বাস্তবমুখী নীতিতে তাঁদের যুক্ত করে না।’
বিসিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, দেশের পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা সবচেয়ে বড় সংকট। উন্নত নীতি ছাড়া এই খাতে খরচ কমানো অসম্ভব। এই সংস্কার কঠিন, কিন্তু অপরিহার্য।
উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, দেশে গাড়ি সংযোজন খাতে যে অটোমোবাইল পলিসি ছিল, এনবিআর সেটিকে জটিল করে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করেছে। ফলে কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানি আগ্রহ দেখায়নি।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]