[ad_1]
ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশ নির্ধারণের ব্যাপারে একমত হয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে এটি পশ্চিমা সামরিক জোটটির সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আজ বুধবার (২৫ জুন) নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
যৌথ ঘোষণায় ন্যাটো বলেছে, ‘গভীর নিরাপত্তা হুমকি ও চ্যালেঞ্জের মুখে আমরা ঐক্যবদ্ধ।’ বিশেষ করে ইউরো-অ্যাটলান্টিক অঞ্চলের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদী হুমকি এবং সন্ত্রাসবাদের ‘অব্যাহত হুমকির’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, ‘ (ন্যাটো) সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতি বছর জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত মূল খাতসহ প্রতিরক্ষা ব্যয়ে বা বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এই ৫ শতাংশের মধ্যে অন্তত ৩.৫ শতাংশ ব্যয় করা হবে সরাসরি প্রতিরক্ষার জন্য, বাকি অর্থ ব্যয় করা হবে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো’, নাগরিক প্রস্তুতি, উদ্ভাবন এবং প্রতিরক্ষা শিল্প খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য।
ন্যাটো জানিয়েছে, সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে প্রতি বছর পরিকল্পনা জমা দিতে হবে, যাতে দেখাতে হবে কীভাবে তারা ধাপে ধাপে এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাবে। স্পেনসহ কয়েকটি দেশের আপত্তির পর এই বার্ষিক পরিকল্পনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে,২০১৪ সালে নির্ধারিত জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্য এখনো অনেক ন্যাটো সদস্য দেশ পূরণ করতে পারেনি।
মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্তকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুই মেয়াদে ইউরোপ এবং কানাডার মিত্রদের ওপর সামরিক ব্যয় বাড়ানোর চাপ দেওয়ার পরে এমন সিদ্ধান্ত এলো।
ন্যাটো এক বিবৃতিতে আরও বলেছে, ‘আমরা আমাদের ১০০ কোটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, জোটকে রক্ষা করতে এবং স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অক্ষুণ্ণ রাখতে ঐক্যবদ্ধ।’
ঐতিহাসিক অগ্রগতি
শীর্ষ সম্মেলনে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের সম্মিলিত প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে কেবল নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে না, বরং কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই এখন বুঝতে পারছে, হুমকির মাত্রা কতটা গুরুতর, এবং নিরাপদ থাকতে হলে আমাদের এগিয়ে আসতেই হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রসঙ্গে রুটে বলেন, ‘ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেছেন, আমেরিকা ন্যাটোর পাশে আছে, তবে ইউরোপীয় মিত্র এবং কানাডারও আরও বেশি অবদান রাখা উচিত—এবং সেটাই আমরা এখন দেখছি।’
রুটে সতর্ক করেন, এই উদ্যোগের এটি কেবল ‘প্রথম দিন’। তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্ভাবন করতে হবে, দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আজকের সিদ্ধান্ত ন্যাটোকে শুধু আরও শক্তিশালী করবে না, বরং এটিকে আরও ন্যায্য একটি জোটে পরিণত করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আছি, অনুচ্ছেদ ৫ (আর্টিকেল ৫) নিয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং আমরা দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাব।’
প্রসঙ্গত আর্টিকেল ৫ অনুযায়ী, ন্যাটোর কোনো একটি সদস্যদেশ আক্রান্ত হলে সেটি সব ন্যাটোভুক্ত দেশের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এই অনুচ্ছেদটিই ন্যাটো জোটের সম্মিলিত নিরাপত্তা কাঠামোর মূল ভিত্তি।
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রুটে বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি সব প্রশংসার দাবিদার।’
গত মঙ্গলবার রাতে শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘অনুচ্ছেদ ৫-এর অনেক ব্যাখ্যা আছে, আপনারা সেটা জানেন, তাই তো? তবে আমি তাদের (ইউরোপীয়দের) বন্ধু হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বুধবার রুটে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ বক্তব্যকে বিশ্বাস করেন, এবং মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণরূপে ন্যাটো চুক্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, "আপনারা জানেন, অনুচ্ছেদ ৫ সম্পূর্ণ স্পষ্ট, তবে কখন এটি কার্যকর হবে সে বিষয়ে কখনই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়নি। "
স্পেনের আপত্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, স্পেনও ৩.৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আন্তরিক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]