শিরোনাম
শেখ হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটি টাকার’ পিয়নের ব্যাংক হিসাব ও সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধরূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে চলবে ‘হট মিডিয়া টেস্ট’, অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বানচতুর্থ দিনের মতো কারমাইকেল কলেজ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’সড়কে ঝরল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ও কলেজছাত্রের প্রাণইসরায়েলি হামলায় নিহত হননি ইরানের আইআরজিসি কমান্ডার ইসমাইল কানি: আনাদোলুরামেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত যুবকের মৃত্যুলঙ্কানদের উইকেট উপহার দিয়ে লাঞ্চে বাংলাদেশঅভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রিমিয়ার ব্যাংকে চাকরি, স্নাতক পাসেই আবেদনগ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেল পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইকেলিং ইন্ডাস্ট্রিজআ.লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন, মহিলা লীগ নেত্রী আটক

নিউইয়র্ক সিটি প্রাইমারি নির্বাচনে ‘জয়ী’ জোহরান মামদানি

নিউইয়র্ক সিটি প্রাইমারি নির্বাচনে ‘জয়ী’ জোহরান মামদানি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদের প্রাথমিক নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক দলের প্রাথমিক নির্বাচনে রাজ্যের অ্যাসেম্বলি সদস্য জোহরান মামদানির কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছেন সাবেক মেয়র অ্যান্ড্রু কুমো। এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এক বড় চমক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর কুমো ২০২১ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে পদত্যাগ করার পর ফের রাজনীতিতে ফিরতে চেষ্টা করছিলেন। সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কুমো বলেন, ৩৩ বছর বয়সী ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট মামদানি এ দফার নির্বাচনে ‘জয়ী’ হয়েছেন এবং সামনে কী করা যায় তা তিনি ভেবে দেখবেন।

৬৭ বছর বয়সী কুমো বলেন, ‘আজকের রাত তাঁর (জোহরান) রাত।’ নির্বাচিত হলে মামদানি হবেন নিউ ইয়র্ক শহরের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম ও প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরের নেতৃত্বে আসবেন। নিউইয়র্কে এই ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিই মূলত নভেম্বরের মেয়র নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান দল হোয়াইট হাউস এবং কংগ্রেসের দুই কক্ষেই জয়ী হওয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টি তাদের রাজনৈতিক অবস্থান কীভাবে ঠিক করে তা বোঝার জন্য এই নির্বাচনকে ‘লিটমাস টেস্ট’ হিসেবে দেখা হচ্ছিল। গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, মামদানি বেশ বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। তবে সরাসরি জয় নিশ্চিত করতে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট এখনো পাননি তিনি।

এমন পরিস্থিতিতে কুমোর এই পরাজয় স্বীকার অনেকের জন্যই অপ্রত্যাশিত ছিল। কারণ নিউইয়র্কের ‘র‍্যাঙ্কড চয়েস’ পদ্ধতিতে ভোটাররা পাঁচজন পর্যন্ত প্রার্থীকে পছন্দক্রম অনুযায়ী ভোট দিতে পারেন। ফলে চূড়ান্ত গণনা আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত গড়াতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ট্রিপ ইয়াং বিবিসিকে বলেন, ‘নিউইয়র্ক সিটির আধুনিক ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় আপসেট।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট, তখন নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাটরা চায় তাদের নেতারা সাহসের সঙ্গে লড়ুক। আর জোহরান মামদানি সেটাই দেখিয়েছেন।’

নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কুমো বলেন, তিনি এখনো ভাবছেন আগামী নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন কিনা। তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, তিনি (মামদানি) প্রাইমারি জিতেছেন। আমি আরও বলেছি, ভোটের ফলাফল এবং র‍্যাঙ্কড চয়েস পদ্ধতির পরবর্তী পরিসংখ্যান দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেব, কারণ আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ রাখছি।’

মধ্যপন্থী এবং প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ হিসেবে কুমো পুরো দেশেই পরিচিত, বিশেষ করে কোভিড মহামারির সময় গভর্নরের ভূমিকায় তিনি নজর কেড়েছিলেন। অন্যদিকে মামদানি রাজনীতির বাইরের একজন ‘আউটসাইডার’। সম্প্রতি পর্যন্ত তিনি তুলনামূলক অজানা ছিলেন।

উগান্ডায় জন্ম নেওয়া মামদানি ৭ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে নিউইয়র্ক সিটিতে চলে আসেন। তাঁর প্রচারণায় একটি ভিডিও পুরোপুরি উর্দু ভাষায় প্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি সেখানে বলিউডের সিনেমার ক্লিপও ব্যবহার করেন। অন্য এক ভিডিওতে তিনি স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন। ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার জোরালো সমর্থন এবং ইসরায়েলের সমালোচনা তাকে ডেমোক্রেটিক পার্টির মূলধারার অনেক নেতার সঙ্গে দ্বন্দ্বে ফেলেছে।

প্রচারের সময় তিনি এমন ভিডিও ভাইরাল করেন, যেখানে ট্রাম্পপন্থী ভোটারদের তিনি জিজ্ঞাসা করছিলেন, কেন তারা রিপাবলিকানদের ভোট দিলেন এবং কী হলে তারা ডেমোক্র্যাটদের দিকে ফিরতেন।

মামদানির নির্বাচনী ইশতেহারে রয়েছে—নগরীতে বাস বিনা খরচে করা, সর্বজনীন শিশু পরিচর্যা, ভর্তুকিপ্রাপ্ত বাসাবাড়ির ভাড়া স্থগিত রাখা, নগর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিজস্ব গ্রোসারি দোকান চালু করা—যার খরচ আসবে ধনীদের ওপর নতুন কর বসিয়ে।

সম্প্রতি বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক শহর, যেখানে প্রতি চারজনের একজন দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। ৫ লাখ শিশু প্রতিদিন না খেয়ে ঘুমাতে যাচ্ছে। আর শেষ পর্যন্ত, এ শহর তার বিশেষত্ব হারানোর ঝুঁকিতে আছে।’ কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ এবং সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স, যারা নিজেরাও ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট, তারা মামদানিকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

তাঁর মা পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার। ‘সালাম বোম্বে!’ ও ‘নেমসেক’ এর চলচ্চিত্রের নির্মাতা তিনি। জোহরানের বাবা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাহমুদ মামদানি। তাঁর বিখ্যাত বই ‘গুড মুসলিম, ব্যাড মুসলিম’। জোহরান মামদানি ২০২০ সালে কুইন্সের একটি জেলার প্রতিনিধিত্ব করে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button