[ad_1]
দেশীয় মৌসুমি ফলের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর ফলের বাজারে নেমেছে স্বস্তির ছোঁয়া। আম, কাঁঠাল, লিচু, লটকন, পেয়ারা, আনারস, ড্রাগনের মতো ফলের প্রাচুর্যে শুধু দেশীয় ফল নয়; দাম কমেছে আমদানিকৃত আপেল, মাল্টা, আঙুরেরও।
রাজধানীর উত্তর গোড়ান বাজারে ডাবের স্তূপ নিয়ে বসেছিলেন বিক্রেতা আব্দুর রহিম। মাঝারি আকারের ডাব বিক্রি করছেন ১০০ টাকায়, বড়গুলোর দাম চাচ্ছেন ১২০ টাকা। দামাদামি করলে ৯০ টাকায় ডাব পাওয়া যাচ্ছে; অথচ মাসখানেক আগে কোনো বাজারে ১৫০ টাকার নিচে ডাবের দেখা মিলত না। ডেঙ্গু ও করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এমন সময়ে ডাবের দাম আরও বাড়ার কথা থাকলেও বাস্তবে দাম কমেছে।
এ বিষয়ে আব্দুর রহিম বলেন, বাজারে এখন আম, কাঁঠাল, লিচু, লটকন, পেয়ারা, ড্রাগন, আনারসসহ নানা মৌসুমি ফলের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে ডাবের চাহিদা কমে গেছে; তাই দামও কমেছে। শুধু ডাব নয়, অন্যান্য ফলের দামেও কমতি দেখা গেছে। বাজারে এখন বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। উন্নত মানের আমের দাম একটু বেশি হলেও মাসখানেক আগের তুলনায় দাম বেশ কম। চাহিদা কমায় আমদানিকৃত ফলের দাম কমেছে কেজিপ্রতি প্রায় ২০-৩০ টাকা।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ২০-২৫ ধরনের মৌসুমি ফল পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে আমের বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি। বাজারে এখন ল্যাংড়া, আম্রপালি, বারি-৪, হাঁড়িভাঙাসহ ৮-১০ প্রজাতির আম পাওয়া যাচ্ছে। খুচরায় এসব আম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে বাজারে ৫০ টাকায়ও আম পাওয়া যাচ্ছে, যা এক মাস আগে ৮০ টাকায় বিক্রি হতো।
ঈদের পর থেকে কাঁঠালের দামও কমেছে। আগে যেখানে ১০০ টাকার নিচে কাঁঠাল পাওয়া যেত না, এখন ছোট থেকে মাঝারি আকারের কাঁঠাল মিলছে ৬০ থেকে ১২০ টাকায়। বড় কাঁঠালের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
মানিকনগর বাজারের বিক্রেতা রাইসুল রহমান বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার কাঁঠালের দাম অনেক কম। গত বছর ১০০ টাকার নিচে ছোট-বড় কোনো কাঁঠালই আমাদের বিক্রি করতে হয়নি। এবার ৬০ টাকায়ও বিক্রি করতে হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে আমরা গাজীপুরে বাগান কিনে রেখেছি। এখন সব একসঙ্গে পেকে গেছে, বেশি দিন গাছে রাখা যাচ্ছে না। তাই কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
আনারস, ড্রাগন, লটকন, জাম, লিচু, পেয়ারা, আমড়াসহ প্রায় ১৫-২০ ধরনের দেশীয় ফল বাজারে সহজলভ্য। ছোট আকারের আনারস প্রতি হালি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় এবং বড়গুলো ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লটকন উঠতে শুরু করেছে; বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০-১৪০ টাকায়। দেশীয় ড্রাগনের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে ১০০-১২০ টাকায় নেমে এসেছে, যা মাসখানেক আগেও ২০০-৩০০ টাকা ছিল।
তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে লিচু। দিনাজপুরের লিচু প্রতি শ ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, এবার লিচু দ্রুত শেষ হয়ে গেছে। ফলে দাম কমেনি। গত বছর যে মানের লিচু ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এবার সেটি ৪৫০ টাকার নিচে নামেনি।
অন্যদিকে দেশীয় ফলের প্রাচুর্যে বিদেশি ফলের চাহিদা ও দাম কমেছে। গালা আপেল এখন প্রতি কেজি ২৯০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৩২০ টাকা। সবুজ আপেল ও নাশপাতির দাম ৩০০-৩২০ টাকার মধ্যে, আগে যা ছিল ৩৩০-৩৫০ টাকা। মাল্টার দামও কিছুটা কমেছে। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়।
রামপুরা বাজারের ফল বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, মানুষ এখন সকালের নাশতা করছে আম বা কাঁঠাল দিয়ে। আত্মীয় বাড়ি বা রোগী দেখতে যাওয়ার সময়ও এসব ফল নিয়ে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় ফল উৎসব হচ্ছে। এসব কারণে বিদেশি ফলের চাহিদা কমছে।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]