[ad_1]
ইনস্টাগ্রামের নিরন্তর স্ক্রলিং অনেকের জন্য সময় নষ্টের কারণ হলেও দক্ষিণ কোরিয়ার তরুণ চিত্রশিল্পী মোকা লি-র কাছে এটি হয়ে উঠেছে শিল্পসৃষ্টির অনুপ্রেরণা। এই মাধ্যম ঘেঁটেই তিনি খুঁজে পান অজস্র অচেনা মুখ, যাদের ছবিকে রূপ দেন চিত্রকর্মে—যেগুলোর দাম লাখ ডলারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
২৮ বছর বয়সী এই শিল্পী বলেন, ‘মানুষদের না দেখেই আমি তাদের পর্যবেক্ষণ করতে পারি। ইনস্টাগ্রামের অ্যালগরিদমে যেসব ছবি সামনে আসে, সেগুলোর মধ্যে আমি খুঁজি বিশেষ কিছু।’
এই সপ্তাহে তাঁর তৈরি ‘সারফেস টেনশন ০৭’ শিরোনামের একটি প্রতিকৃতি সুইজারল্যান্ডের আর্ট বাসেল প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হবে লন্ডনের গ্যালারি কার্লোস-ইশিকাওয়ার আয়োজনে। ছবিটি একটি তরুণীকে নিয়ে, যিনি সাদা টি-শার্ট পরে হাসছেন, তাঁর চুল পড়ে গেছে চোখে।
বৃহস্পতিবার সিএনএন জানিয়েছে, লি আগে গুগল সার্চ করে কিংবা মার্কিন আলোকচিত্রী ন্যান গোল্ডিনের কাজ থেকেও অনুপ্রেরণা নিতেন। তবে এখন ইনস্টাগ্রামের ছবিগুলো তাঁকে বেশি আকৃষ্ট করে। তিনি বলেন, ‘মানুষ ইনস্টাগ্রামে নিজেদের খুব সচেতনভাবে উপস্থাপন করে। এটি হয়তো খানিকটা অন্ধকার দিকও হতে পারে। কিন্তু তাদের নিজেকে উপস্থাপন করার এই প্রচেষ্টা আমাকে আকর্ষণ করে।’
যখন কোনো ছবি লির মনে ধরে, তখন তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীকে সরাসরি বার্তা পাঠান এবং ছবির কপিরাইট কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন।
লির প্রতিনিধিত্ব করে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অবস্থিত জেসন হামের গ্যালারি। হামের মতে, লির কাজ মানুষে-মানুষে যোগাযোগের বদলে যাওয়া রূপকে চিত্রায়িত করে। তিনি বলেন, ‘মোনালিসা আঁকা হয়েছিল মডেলকে সামনে বসিয়ে। আর লি একটি ডিএম পাঠিয়ে বলেন—তোমার প্রতিকৃতি আঁকতে চাই, টাকা দেব। তারা একে অপরকে কখনো দেখেও না।’
২০২৩ সালে হংকংয়ের আর্ট বাসেলে লির অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁকে পরিচিত করে তোলে। এরপর তাঁর খ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
২০২৪ সালের শেষ দিকে তাঁর একটি চিত্রকর্ম ‘আমি আমার মতো নই’ শিরোনামে এক নারীকে লাল লিপস্টিকে, ক্যামিসোল পরে বিছানায় বসা অবস্থায় দেখানো হয়েছে। হংকংয়ের নিলামে এটি বিক্রি হয় দুই লাখ ডলারের বেশি দামে। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো বিশের দশকের শিল্পীর জন্য রেকর্ড মূল্য।
এই বছর (২০২৫ সাল) আর্টসি-এর ‘ভ্যানগার্ড তালিকা’-তেও জায়গা করে নিয়েছেন লি। এখানে মূলত উদীয়মান ১০ জন সমসাময়িক শিল্পীকে তুলে ধরা হয়।
লি জানান, আগে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অনুরোধ অনেক সময়ই প্রত্যাখ্যাত হতো। কিন্তু এখন পরিচিতি বাড়ায় মানুষ রাজি হয় সহজেই। তিনি প্রতিটি চিত্রকর্মে ব্যবহার করেন ওয়েস্টার্ন অয়েল পেইন্ট, কিন্তু সেটির মধ্যে থাকে ‘এশিয়ান টেকনিক’। জলরঙের স্তরায়ণের ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি পাতলা তেলরঙে একাধিক স্তরে রং প্রয়োগ করেন।
জেসন হামের মতে, লির এই অনন্য পেইন্টিং স্টাইল চিত্রগুলোতে এক রহস্যময় রঙের গাম্ভীর্য এনে দেয়। তিনি বলেন, ‘আমি রঙের এমন স্তরায়ণ আগে দেখিনি।’
আর লি নিজে বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ার এখন কোরিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববাজারে পা রাখছে। কিন্তু আমি এখনো সিউলের ছোট একটা স্টুডিওতে বসে ফোন ঘেঁটে ছবি দেখি—সবকিছুই যেন স্বপ্নের মতো।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]