[ad_1]
ভাঙাচোরা একটি বাইসাইকেলই ১৪ বছরের কিশোর তোফাজ্জলের একমাত্র সম্বল। প্রতিদিন ভোরে সেই সাইকেলে করে ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যায় সীমান্তবর্তী দুর্গম খাসিয়া পল্লিতে। দিনভর খেটে উপার্জন করে মাত্র দুই-আড়াই শ টাকা। এই সামান্য আয়েই চলছে পুরো পরিবার।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামের বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন। তার বাবা আলী আহমেদ (৬৫) হার্টের রোগে আক্রান্ত, বড় বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন এবং ৮২ বছর বয়সী দাদি সমিতা বিবি এক বছর ধরে শয্যাশায়ী।
তোফাজ্জল বলে, ‘প্রতিদিন সকালে সাইকেল নিয়ে খাসিয়া পল্লিতে যাই। কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরি। যা আয় হয়, তাতে ঠিকমতো দুবেলা খেতেও পারি না। আল্লাহ ছাড়া আমাদের দুনিয়ায় কেউ নেই।’
পরিবারের দুরবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেশী ফজল মিয়া ও আবু শহীদ জানান, ‘তারা প্রকৃত অর্থেই অসহায়। তিনজনই অসুস্থ। আমাদের সাধ্যের মধ্যে যতটা পারি, সাহায্য করি।’
সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট ঘরটিতে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে পেতে রাখা পুরোনো কাঁথায় শুয়ে আছেন দাদি সমিতা বিবি। অপুষ্টিতে জীর্ণ শরীর, কথাও স্পষ্ট বলতে পারেন না। ক্লান্ত স্বরে বলেন, ‘ঈদের দিন ডাল-ভাত খেয়ে কাটাইছি। ক্ষিধার জ্বালায় ঘুম আসে না। তোফাজ্জল ছোট মানুষ, সে আর কত করবে? আল্লাহ যা দেয়, তাই খাই। চালে-ডালে কোনোমতে চলে, কিন্তু ওষুধ কিনতে পারি না। অনাহারে থাকতে হয় অনেক সময়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের চান্দে কেউ কেউ খাবার দেয়, কেউ কিছু টাকা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি। সাহায্য না পেলে না খেয়েই থাকতে হয়।’
শুধু দাদি নয়, পুরো পরিবারই মানবেতর জীবন যাপন করছে। পা ভাঙার পর থেকে সমিতা বিবি বিছানায়, বাবাও কাজ করতে অক্ষম। ফলে কিশোর তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, ‘কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের একটি ঘর দেওয়া হয়েছে। তবে এখন তাদের আরও সহায়তা প্রয়োজন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুরবস্থার খবর ছড়িয়ে পড়লে কিছু লোক খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু দাদি সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশার সুচিকিৎসা এবং তোফাজ্জলের ভবিষ্যতের জন্য আত্মনির্ভরশীলতার ব্যবস্থা করা জরুরি।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]