[ad_1]
নিজের ঘরের চারদেয়ালের ভেতরে আমরা ব্যক্তিগত কথাবার্তা, পারিবারিক আলাপ নিশ্চিন্তে করে থাকি। তবে ডিজিটাল যুগের বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলছে। গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের ঘরে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, স্মার্ট স্পিকার বা হেডফোন—এই সাধারণ ডিভাইসগুলোই ব্যবহার করে ব্যক্তিগত কথা শুনে নিচ্ছে হ্যাকাররা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা এবং জাপানের ইউনিভার্সিটি অব ইলেকট্রো-কমিউনিকেশনসের গবেষকেরা সম্প্রতি একটি নতুন নিরাপত্তা ত্রুটি (সিকিউরিটি ফ্ল) খুঁজে পেয়েছেন, যা সাধারণ ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জন্য উদ্বেগজনক বার্তা বয়ে এনেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ল্যাপটপ, স্মার্ট স্পিকারসহ নানা ধরনের সাধারণ ইলেকট্রনিক ডিভাইসে থাকা মাইক্রোফোন থেকে অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু রেডিও সিগন্যাল ছড়ায়। এসব সিগন্যাল আসলে দূরবর্তী রেডিও যন্ত্র দিয়েও ধরা যায়, এমনকি পুরু কংক্রিট দেয়াল ভেদ করেও। শুধু একটি সাধারণ এফএম রেডিও রিসিভার ও একটি তামার তার (কপার ওয়্যার) ব্যবহার করেই এই কথোপকথন রেকর্ড করা সম্ভব। আর এই সিস্টেম তৈরির খরচ ১০০ ডলারেরও কম।
আরও আশঙ্কার বিষয় হলো—এসব রেকর্ডিংয়ে শব্দের মান প্রথমে দুর্বল থাকলেও আধুনিক সফটওয়্যারের মাধ্যমে তা স্পষ্ট করা সম্ভব। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে রেকর্ডিং থেকে নির্দিষ্ট শব্দ বা বাক্য খুঁজেও বের করে ফেলেছেন গবেষকেরা।
এ সমস্যার মূল উৎস হলো—এমইএমএস (এমইএস) মাইক্রোফোন, যার পূর্ণরূপ মাইক্রোইলেকট্রোমেকানিক্যাল সিস্টেমস। ছোট আকৃতির এই সস্তা মাইক্রোফোনগুলো প্রায় সব ধরনের আধুনিক ইলেকট্রনিক ডিভাইসেই ব্যবহার করা হয়। শব্দ গ্রহণ করার সময় এগুলো থেকে সামান্য রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (আরএফ) নির্গত হয়, যাতে ধারণকৃত কথাবার্তার আংশিক তথ্য থেকে যায়।
গবেষণায় আরও জানা যায়, ইউটিউব, স্পটিফাই, আমাজন মিউজিক বা গুগল ড্রাইভের মতো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার না করলেও অনেক সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে এগুলো মাইক্রোফোন সক্রিয় রাখে। এতে আপনি কথা না বললেও আপনার ডিভাইসগুলো ‘শোনে’ এবং রেডিও তরঙ্গ হিসেবে তা ছড়িয়ে দেয়।
বিভিন্ন ডিভাইস পরীক্ষা করে গবেষকেরা দেখেছেন, ল্যাপটপ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, ল্যাপটপে মাইক্রোফোন সাধারণত দীর্ঘ তারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে, যা অ্যানটেনার মতো কাজ করে এবং সিগন্যাল শক্তিশালী করে তোলে।
তবে আশার কথা হলো, এই সমস্যার সমাধানে ব্যয়বহুল প্রযুক্তির প্রয়োজন নেই। মাইক্রোফোনের সংযোগ তার ছোট করে দেওয়া বা মাইক্রোফোনকে সার্কিট বোর্ডের কাছাকাছি বসালে সিগন্যালের মাত্রা অনেকটাই কমে আসে। একই সঙ্গে, মাইক্রোফোন যেভাবে শব্দ প্রক্রিয়াজাত করে, সেই পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনলেও ফাঁস হওয়া তথ্য বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে।
গবেষকেরা ইতিমধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তাদের এই গবেষণা ও সমাধান শেয়ার করেছেন। তবে কোম্পানিগুলো এসব সুপারিশ কতটা বাস্তবায়ন করবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
তথ্যসূত্র: নোরিডজ সায়েন্স
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]