ইরান ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়, এসব যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করতে পাকিস্তানি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তবে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ দেশটির নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এসব খবর ভিত্তিহীন ও প্রোপাগান্ডা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইরানকে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে প্রচারিত খবরকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্র। এসব খবরে বলা হচ্ছিল, ইসরায়েল-ইরান চলমান সংঘাতে ইরানকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে পাকিস্তান।

নিরাপত্তা সূত্রগুলো এসব খবরকে ‘ভিত্তিহীন, তুচ্ছ এবং ভারতীয় গণমাধ্যম ও তাদের সহযোগী বিদেশি আউটলেটগুলোর দ্বারা পরিচালিত একটি প্রচারণা অভিযান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ইরান ও পাকিস্তানের পতাকার ছবিসহ পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে একটি বিবৃতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এই বিষয়টি সামনে আসে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই বিবৃতিকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সমর্থনে পাকিস্তান ‘পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া’ দেবে বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা মিথ্যা। তারা আরও স্পষ্ট করেছে যে, ইরানের পাশাপাশি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যুদ্ধে যোগ দিচ্ছে বলে যে দাবি করা হয়েছে, তাও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

এদিকে, আজ রোববার দিনভর ইসরায়েল ও ইরান একে অপরের ওপর নতুন করে হামলা চালিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সংঘাত সহজে শেষ করা যেতে পারে, তবে তেহরানকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা না করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি।

ইসরায়েলি উদ্ধারকারী দলগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত আবাসিক ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিতদের সন্ধানে ফ্ল্যাশলাইট ও স্নাইফার কুকুর ব্যবহার করে তল্লাশি চালিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় শিশুসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে।

অপরদিকে, তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা বাতিল করেছে। বিপরীতে ওয়াশিংটন বলেছিল ইসরায়েলের বোমা হামলা বন্ধ করার একমাত্র উপায় এই আলোচনা। অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের এ পর্যন্ত হামলা ইরানের আগামী দিনে যা দেখবে তার তুলনায় কিছুই নয়।

ইরানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শুক্র ও শনিবার ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও শত শত মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় এতেমাদ দৈনিক ইরানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘এই সামরিক হামলায় অন্তত ১২৮ জন শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় ৯০০ আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ‘৪০ জন নারী’ রয়েছেন এবং ‘শহীদ শিশুদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।’