বরিশাল মহানগর যুবদলের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড আহ্বায়ক রমজান হাওলাদারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশুদের শ্লীলতাহানি, ছিনতাইয়ের চেষ্টা, গাড়ি গতিরোধ এবং গালিগালাজের মতো গুরুতর অভিযোগে তাকে শোকজ করেছে বরিশাল মহানগর যুবদল। সংগঠনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মহানগর যুবদলের দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান চপল স্বাক্ষরিত ওই শোকজ নোটিশে জানা যায়, বরিশাল মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম জাহান এই অভিযোগ আমলে নিয়ে সহ-সভাপতি কাইয়ুম রেজওয়ান সাগর ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহফুজ রেজা খান মিঠুকে নিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
মহানগর যুবদলের দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান চপল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পাশাপাশি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে রমজান হাওলাদারকে কারন দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে প্রশাসন পরিচয়ে হয়রানির অভিযোগের ঘটনায় রমজান হাওলাদার ও মাছুম মাঝির নাম উল্লেখ করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় ভুক্তভোগী রুবিনা আক্তার মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জুন (মঙ্গলবার) রাত ১০টার দিকে রুবিনা আক্তার তার দুই মেয়ে, এক ছেলে এবং ফুফুকে নিয়ে প্রাইভেটকারে কলাডেমা খানবাড়ি থেকে সমাজকল্যাণ এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সমাজকল্যাণ অফিসের সামনে রমজান হাওলাদার ও মাসুম মাঝি আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ির গতিরোধ করে।
তারা নিজেদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে গাড়িতে ইয়াবা আছে বলে দাবি করে তল্লাশি চালাতে চায়। একপর্যায়ে রুবিনার সন্তানদের জোরপূর্বক গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ির ভেতরে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ, শারীরিক লাঞ্ছনার চেষ্টা এবং কন্যাদের শ্লীলতাহানার চেষ্টা করা হয়। রুবিনা আক্তারের অভিযোগ, পুরো ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, যার উদ্দেশ্য ছিল অর্থ লুট।
উল্লেখ্য, রমজান হাওলাদারের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহর ব্যানার ভাংচুর, ছাত্রদলের কার্যালয় ভাংচুরসহ সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলার একাধিক ঘটনা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে রয়েছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এবং দলে আতঙ্ক তৈরি করেন। ফলে তার কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
নেতাকর্মীরা অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে কেউ সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে না পারে।
বরিশাল মহানগর ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহবায়ক সজীব বেগ মিসাদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্পস্ট নির্দেশনা দলের মধ্যে কোন অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দেয়া হবে না। এর আগেও এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এমন অনেক অভিযোগ শুনেছি। তাই আমরা চাই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]