[ad_1]
নানিকে দেখতে পরিবারের সঙ্গে রংপুর থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছিল সাদিয়া আক্তার (১১) আর সাদ্দাম হোসেন (৬)। দুপুরের তীব্র গরমে নাগর নদীতে নেমেছিল গোসল করতে। হঠাৎ পানির স্রোতে হারিয়ে যায় দুই শিশু। খোঁজাখুঁজির পর সাদিয়ার মরদেহ পাওয়া গেলেও ছোট ভাই সাদ্দামকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনাটি ঘটে আজ বৃহস্পতিবার জেলার হরিপুর উপজেলার গেদুড়া ও আমগাঁও ইউনিয়নের সংযোগস্থল ‘স্লুইসগেট’ এলাকায়।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মণ্ডল এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মৃত দুই শিশুর বাবা আমিনুল ইসলাম রংপুরের পশুরাম থানার জলছত্র গ্রামের বাসিন্দা। ছুটি পেয়ে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন শ্বশুরবাড়ি, হরিপুরের আমগাঁও গ্রামে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘তীব্র গরমে আমরা সবাই নাগর নদীতে গোসল করতে নামি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি সাদিয়া আর সাদ্দাম স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। চিৎকার করে ওদের ধরতে ছুটলাম, কিন্তু পারলাম না।’ চোখে পানি, কণ্ঠে কাঁপন—কথা বলছিলেন আর বারবার মাথা নিচু করছিলেন তিনি।
বুক চাপড়ে বিলাপ করছিলেন শাশুড়ি আছমা বেগম। বলছিলেন, ‘সাদিয়া বলেছিল—নানি, আমি তোদের সঙ্গেই থাকব। কে জানত এটাই তার শেষ কথা।’
সাদিয়ার মরদেহ পাওয়া গেছে বিকেল ৪টার দিকে নদীর মানিকখাড়ি অংশে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে খোঁজাখুঁজি চলে। নদীর পাড়ে ছুটে আসেন মানুষ, কেউ নেমে পড়েন পানিতে, কেউ পাথরের ফাঁকে ফাঁকে খুঁজতে থাকেন সেই ছোট ছোট হাত দুটো। কিন্তু এখনো খোঁজ নেই সাদ্দামের।
স্থানীয় বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্লুইসগেট এলাকা খুবই বিপজ্জনক। প্রতিবছর এখানে কেউ না কেউ ডুবে যায়। অথচ কোনো সাইনবোর্ড নেই, নেই কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা।’
একই ক্ষোভ ঝরে স্থানীয় দোকানি আবদুল মালেকের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি তিনজন গোসল করছে। হঠাৎ চিৎকার শুনে দৌড়ে যাই। মেয়েটিকে তো পাওয়া গেল, ছেলেটির খোঁজ এখনো নেই।’
ওসি জাকারিয়া মণ্ডল বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে রংপুর থেকে ডুবুরি দল এসে উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেয়। নদীর যে অংশে তারা গোসল করছিল, সেটি ছিল গভীর ও খালের মতো। সম্ভবত সেখানে নেমেই ডুবে যায় দুই ভাই-বোন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ শিশু সাদ্দামের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]