ক্রাইম জোন ২৪।। বরিশালে ওয়ারেন্টভুক্ত এক ছাত্রলীগ নেতাকে সঙ্গে নিয়ে আসামি ধরতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া একাধিক ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যও এই ঘটনা নিয়ে সন্দেহ আরও বাড়িয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল নগরীর রুপাতলীর সিকদার প্যালেসে কামাল নামের এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে ধরতে যায় পুলিশ। ওই অভিযানে পুলিশের সঙ্গে ছিল ছাত্রলীগ নেতা খালেদ খান রবিন, যিনি নিজেকে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দেন। তবে রবিন নিজেই একটি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। গত বছরের ৪ আগস্ট বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তার নামে মামলা রয়েছে।
রুপাতলী এলাকার বাসিন্দা মনির খলিফা জানান, অভিযানের সময় কামালের স্ত্রী অনামিকা জেসমিন রবিনের পরিচয় জানতে চাইলে সে দ্রুত পালিয়ে যায় এবং মোটরসাইকেলটি রেখে যায়। পরবর্তীতে সেই মোটরসাইকেলটি সাব-ইন্সপেক্টর পিনাকি থানায় নিয়ে যান। পরে তিনি বলেন, “মোটরসাইকেল আমি মাজেদ স্যারের কথায় নিয়ে আসছি। পরে মাজেদ স্যার আবার সেটা নিয়ে যায়।”
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “রবিন নামে কাউকে আমি চিনিনা।” তবে তিনি আরও বলেন, “জানা গেছে, রবিন সাব-ইন্সপেক্টর মাজেদের সোর্স।” অন্যদিকে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এসআই মাজেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্রলীগের ওয়ারেন্টভুক্ত নেতা কীভাবে পুলিশের সোর্স হয় তা নিয়ে এখন চরম প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যে ছাত্রলীগ অপকর্ম করেছে, এখনো সেই চক্রকে রক্ষা করতে পুলিশের একটি অংশ সক্রিয়। অনেকে বলছেন, “এসআই মাজেদের মতো পুলিশরাই এখনো দেশকে স্বৈরাচারী শাসনের ছায়ায় ঠেলে দিচ্ছে। এদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা জরুরি।”
এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, “রবিনের নামে যদি মামলা থেকে থাকে, তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।” তবে এ বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই ঘটনা নিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, “ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি যদি পুলিশের সোর্স হয়, তাহলে আইনের শাসন কোথায়?”
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]