ক্রাইম জোন ২৪।। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখের দিন পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ঐতিহ্য দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তবে এবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, এটি বাংলাদেশের সংস্কৃতির অংশ নয় এবং ঢাকায় তা চালু হওয়ায় এটি একটি আরোপিত সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত। তার এই বক্তব্য জনমনে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যারা পহেলা বৈশাখের দিন পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ঐতিহ্যকে সমর্থন করে।
ফরিদা আখতার বলেছেন, পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়া নিয়মিত প্রথা নয়, কারণ এই সময়ে ইলিশ পাওয়ার কথা নয়। তিনি উল্লেখ করেছেন, যদি কেউ পহেলা বৈশাখে ইলিশ খান, তবে তারা জাটকাই খাচ্ছেন এবং এভাবে তারা আইন লঙ্ঘন করছেন। তিনি বিশেষভাবে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছেন এবং জাটকা সংরক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এরপরেই বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খেয়ে অন্য খাবার যেমন বাতাসা, দই, চিড়া, মিষ্টি, ছাতুর শরবত, ভাত, শাক-সবজি খান।" তবে, এভাবে সরকারের পক্ষ থেকে জনসাধারণের খাবারের উপর বিধি-নিষেধ আসা সবার কাছে সহজভাবে গ্রহণযোগ্য হয়নি।
এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে ইলিশের বাজারে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও জাটকা সংরক্ষণের কার্যক্রমের দিকে বেশ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মৎস্য উপদেষ্টা সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানোর পরও, জনমনে রয়েছে বিভ্রান্তি। বিশেষ করে, গত বছর ভারতের সাথে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে যে কথাবার্তা হয়েছিল, সেগুলোও এখন আবার সামনে আসছে। গত বছর ভারতকে ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল, কিন্তু কিছুদিন পরই তা শিথিল করা হয়েছিল, যা জনমনে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল।
এ বছরের পহেলা বৈশাখে ফের ইলিশ খাওয়ার দিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়ার বিষয়টি একদিকে যেখানে জাটকা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে, অন্যদিকে অন্যদের কাছে তা একধরণের দ্বৈত মানদণ্ড হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যেহেতু গত বছর ভারতকে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছিল, এবছরও সেই একই পরিস্থিতি কি ফিরে আসবে, না কি সরকার ইলিশ রপ্তানি আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়ার ঐতিহ্য আর নতুন করে সরকারি নির্দেশনা জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে এবং সরকারের পদক্ষেপের প্রতি মানুষের সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে।
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]