ক্রাইম জোন ২৪।। বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট বিক্রয়কারী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সহজ ডটকম ও রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারীদের যোগসাজশে ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে কয়েক ধাপে চালানো অভিযানে পুলিশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) চক্রের মূলহোতাসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে তিনজন রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— উত্তম চন্দ্র দাস (৩৪), হাবীব আহমেদ (২৬), মো. ফারুক (৫৫), আব্দুল্লাহ আল মুমিন (৩০), প্রকাশ চন্দ্র রায় (৩৪), রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারী মো. জুবায়ের (২৯), মো. সোহেল রানা (২১) ও কামরুজ্জামান (৩৫)।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৩ লাখ ৩ হাজার ৪২ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গতকাল রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে র্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির উপ-অধিনায়ক লে. কমান্ডার মোহাম্মদ জাকিউল করিম বলেন, বিগত বছরগুলোতে ঈদ উপলক্ষ্যে ট্রেনে যাত্রীদের চাপ বাড়ে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ রেলওয়ের শতভাগ টিকিট অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সহজ ডটকমের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। কিন্তু অভিযোগ আসে, টিকিট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে র্যাব-১ এর একটি দল গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে তদন্ত শুরু করে এবং টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূল হোতাসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
প্রথমে র্যাব ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে চক্রের মূলহোতা উত্তম চন্দ্র দাসকে একটি অনলাইন টিকিটের প্রিন্টেড কপিসহ গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে র্যাব ঢাকার কাওলা এলাকা থেকে হাবীব আহমেদ, ফারুক এবং রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারী জুবায়েরকে তিনটি অনলাইন টিকিটের প্রিন্টেড কপিসহ গ্রেপ্তার করে।
উত্তম চন্দ্র দাস স্বীকার করেছেন যে, তিনি প্রতি ঈদ মৌসুমে আনুমানিক ৫০০-৭০০ রেলওয়ে টিকিট অবৈধ উপায়ে কালোবাজারে বিক্রি করতেন এবং এতে প্রতি মৌসুমে তার ৩-৪ লাখ টাকা অবৈধ আয় হতো। তার বিরুদ্ধে আগেও পুলিশের চারটি মামলা রয়েছে।
পরে আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ দল পুনরায় ফাঁদ পাতে এবং বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারী সোহেল রানাকে ছয়টি অনলাইন টিকিটের প্রিন্টেড কপিসহ গ্রেপ্তার করে। এরপর আটক ব্যক্তিদের নিয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে রেলওয়ের অপর আউটসোর্সিং কর্মচারী আব্দুল্লাহ আল মুমিন ও প্রকাশ চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটকদের মোবাইল যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, তারা প্রত্যেকে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
র্যাব-১ উপ-অধিনায়ক বলেন, আটক প্রকাশ চন্দ্র রায়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সহজ ডটকমের কিছু অসাধু কর্মী এই টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
অপর গ্রেপ্তারকৃত কামরুজ্জামান স্বীকার করেছেন, তিনি প্রতিমাসে ১০০-১৫০ এর অধিক টিকিট কালোবাজারি চক্র থেকে সংগ্রহ করতেন।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]