নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কেউ নতুন জাল বুনছেন, কেউ ছেঁড়া জালে জোড়া লাগাচ্ছেন, আবার কেউ ট্রলার মেরামতের কাজে ব্যস্ত। তবুও পরিবার চালানোর চিন্তায় উদ্বিগ্ন জেলেরা।
জানা গেছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতি নিবন্ধিত জেলেকে নিষেধাজ্ঞার দুই মাসে ৪০ কেজি করে মোট ৮০ কেজি চাল দেওয়ার কথা। তবে ১ মার্চ থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাননি জেলেরা। ফলে রমজানের শুরুতেই কঠিন সংকটে পড়েছেন তারা।
চরমোন্তাজের জেলে স্বপন মাঝি বলেন, ‘নদীতে মাছ তেমন পাওয়া যাচ্ছিল না, ভাবছিলাম এবার হয়তো কিছুটা ভালো হবে। কিন্তু মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো, অথচ কোনো সহায়তা পাইনি। এখন পরিবার চালাবো কীভাবে?’
অপর এক জেলে শাহ আলম জানান, ‘আমরা অনেকেই নিবন্ধিত নই। আমাদের কার্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে দুই বছর হয়ে গেল, কিন্তু এখনো কোনো খবর পাইনি। মৎস্য বিভাগের কাছে দাবি, দ্রুত আমাদের নিবন্ধনের আওতায় আনা হোক।’
জেলেরা আরও জানান, বছরে তিন-চারবার মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সরকারি সহায়তা বরাদ্দ থাকলেও তা অনেক সময় দেরিতে বিতরণ করা হয়, যা নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কোনো কাজে আসে না। তাই দ্রুত খাদ্য সহায়তা প্রদানসহ দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন তারা।
পটুয়াখালী সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য দেশের ছয়টি অভয়াশ্রমে মার্চ ও এপ্রিল মাসে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যারা সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবে, তাদের দুই ধাপে ৮০ কেজি চাল দেওয়া হবে। যারা নিবন্ধিত নন, তাদের দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালীতে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৫ হাজারের বেশি। এর বাইরেও প্রায় অর্ধলাখ জেলে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে অনেকেই এখনো নিবন্ধনের বাইরে থাকায় সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।